Print Date & Time : 9 September 2025 Tuesday 1:00 pm

আগস্টে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ১২ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের অর্থনৈতিক সংকটে সুখবর দিচ্ছে প্রবাসীদের পাঠানো আয়। চলতি বছরের আগস্ট শেষে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের অবস্থানরত প্রবাসীরা ২০৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার পাঠিয়েছে; যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিট্যান্স-সংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, রেমিট্যান্স আনার জন্য সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে। এর জন্য প্রবাসীদের পাঠানো আয়ে একটা ইতিবাচক ধারা ফিরছে। এছাড়া বর্তমানে ডলারের দাম বেশি; তাই বৈধ চ্যানেলে মানুষ বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। তবে ব্যাংক ও খোলাবাজারের মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে, তা আরও কমিয়ে আনতে হবে। তাহলে আগামীতে আরও বাড়বে এ আয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে অনুযায়ী, চলতি বছরের আগস্ট মাসে প্রবাসীরা ২০৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন; যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। গত বছরের আগস্টে ১৮১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। তবে আগের মাস জুলাই অপেক্ষায় ৬ শতাংশ রেমিট্যান্স কম পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। তারা জুলাই মাসে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২০৯ কোটি ডলার।

তথ্য বলছেন, আগস্টে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৬ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৬৪ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোয় এসেছে ৭৫ লাখ ডলার। বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে এসেছে দুই কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।

সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৪৩ কোটি ডলার। এরপর সিটি ব্যাংকে ১৪ কোটি, অগ্রণী ব্যাংকে ১৩ কোটি ডলার, পূবালী ব্যাংক ১১ কোটি ডলার, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে ১০ কোটি ডলার এবং রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১০ কোটি ডলার।

আলোচিত এ সময়ে সরকারি বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বিদেশি ব্যাংক আল-ফালাহ্, হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স পাঠাননি প্রবাসীরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।

বৈদেশিক মুদ্রার সংকট নিরসনে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে ডলারের বিপরীতে টাকার মান ধারাবাহিক কমাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারে কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৯৫ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারি আমদানি বিল মেটাতে এই দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে। নিয়ম অনুযায়ী এটাই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর।

তবে বিভিন্ন ব্যাংক ও কার্ব মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল ব্যাংকগুলো আমদানি বিলের জন্য নিচ্ছে ৯৬ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত, নগদ ডলার বিক্রি করছে ১০৬ থেকে ১০৮ টাকা, আর খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১০৯ থেকে ১১০ টাকা।