নিজস্ব প্রতিবেদক: তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়াটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদে উত্থাপন ও অনুমোদনের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলরুমে গতকাল স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ: অগ্রগতি ও করণীয়সমূহ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি জানান।
সম্মেলনে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে যে তিনটি বিশেষ দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন তার মধ্যে অন্যতম হলো বর্তমান আইনকে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উপনীত করা। তার আলোকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি যুগোপযোগী করতে একটি খসড়া সংশোধনী প্রণয়ন করেছেন, যেটি বর্তমানে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আছে।
প্রস্তাবিত ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনে যেসব সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা, বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির ‘করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা’ (সিএসআর) কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা/মোড়কবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা এবং তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার বৃদ্ধি করা। স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন মনে করে সংশোধনীটি পাশ হলে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি যেমন বৈশ্বিক মানদণ্ডে উপনীত হবে, সেই সঙ্গে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তিও আরও উজ্জ্বল হবে; এবং তামাকের ভয়ংকর ছোবল থেকে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার পথ সুগম হবে।
সংবাদ সম্মেলনের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিংয়ের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের সুপারিশ আমলে নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের জন্য চূড়ান্ত খসড়া প্রণয়ন করেছে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যাতে দেশের অর্থনীতি ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়াটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদে উত্থাপন করে অনুমোদন করা হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ বিশেষ অতিথি ছিলেন। তারা বলেন, তামাক জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় হুমকি। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংশোধনীটি পাস হলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার পথ সুগম হবে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় তামাক আইন সংশোধনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ। সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।