নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: বে টার্মিনাল চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এটি হবে বাংলাদেশের গেম চেঞ্জার। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বন্দরের হ্যান্ডলিং ক্ষমতা প্রায় তিন গুণ বৃদ্ধি পাবে। আগামী মাসের মাঝামাঝিতে ডিপিপি অনুমোদন পাবে আশা করি। ৫০০ একর জায়গা অধিগ্রহণ করেছি। যত দ্রুত বে টার্মিনাল করতে পারব ততই দেশের লাভ। গতকাল বৃহস্পতিবার শহিদ মো. ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান।
তিনি বলেন, বন্দরের নিরাপত্তা ছিল আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। বন্দরকে কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। ইউএসএর আইএসপিএস টিম অডিট করে সন্তোষ জানিয়েছে। এবার কোনো অবজারভেশন ছিল না। উন্নত দেশের গ্রিন বন্দর পুরোপুরি অটোমেটেড। আমাদের বন্দরও দ্রুত সময়ে ডকুমেন্টেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য আগামী জুনের মধ্যে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু হবে। এইচএসবিসি ও ইবিএল ব্যাংকের মাধ্যমে ই-পেমেন্ট সিস্টেম কার্যক্রম চালু করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
অপারেশনের গতি বাড়ানো প্রসঙ্গে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বন্দরের বহির্নোঙরে মাদার ভেসেল থেকে পণ্যবোঝাই করার পর লাইটার জাহাজগুলো যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়াই পোর্ট লিমিটের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় দিনের পর দিন অবস্থান করে; যা পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় এবং সাধারণ জনগণের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে, বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং ভোক্তাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এভাবে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মূল্য বৃদ্ধির অপচেষ্টা রাষ্ট্র এবং জনস্বার্থবিরোধী। এছাড়া সীমিত এলাকায় এত অধিকসংখ্যক লাইটারের অবস্থানের কারণে নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি সাপ্লাই চেইনও বিঘিœত হয়। তাই বন্দরের কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন রাখতে মালামাল লোড করার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে লাইটার জাহাজকে পোর্ট লিমিট ত্যাগ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যথায় চট্টগ্রাম বন্দর আইন ও আইএসপিএস কোড অনুযায়ী প্রযোজ্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রেলের ইঞ্জিনের সংকট রয়েছে। পণ্যবাহী গাড়ির স্থানীয় কর্মবিরতির কারণেও সমস্যা হয়েছে। পানগাঁওতে আইসিটি আধুনিকায় ও ব্যবসাবন্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে নদীপথে পণ্য পরিবহন কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এতে রোড ও রেলেই ওপর চাপ কমবে; একই সঙ্গে সাশ্রয়ী মূল্য আমদানি-রপ্তানির পথ সুগম হবে।
তিনি বলেন, গত সরকারের আমলে বন্দর নানা সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি ছিল। সিন্ডিকেট ভাঙার উদ্যোগ নিয়েও আমরা সফল হয়েছি। যার ফলে বন্দরের খরচ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। পাশাপাশি এই বন্দর কার্গো ও কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে রেকর্ড করেছে। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে ৩ দশমিক ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এই পোর্টকে জনবান্ধব করার জন্য স্বচ্ছতা, ন্যায় ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। আমরা সিস্টেমের ভেতরে পরিবর্তন আনছি। ওভার ফ্লো ইয়ার্ড গড়ে তুলতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি ১৯টি অফডককে আরও কার্যকর করতে। তিনি বলেন, আমি আসার পর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, এনবিআর, কাস্টম সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিয়েছে।