আজকের দিনে

কংগ্রেস দলের বামপন্থি নেতা, ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রতিষ্ঠাতা ও ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির সর্বাধিনায়ক সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম ২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার কটক গ্রামে। তার পিতার নাম জানকীনাথ বসু ও মাতা প্রভাবতী দেবী।  তিনি কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকেই ডিস্টিংকশনসহ দর্শনশাস্ত্রে অনার্স ডিগ্রি লাভ করেন।  পরে আইসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। অনতিবিলম্বে তিনি সিভিল সার্ভিস থেকে ইস্তফা দিয়ে চিত্তরঞ্জন দাশের নেতৃত্বে ভারতের জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে যোগ দেন।

১৯২৪ সালে সুভাষ বসুকে কলকাতা করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়। ওই বছরই জঙ্গি জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জন্য তাকে কারারুদ্ধ করা হয়। স্বাস্থ্যগত কারণে তাকে ১৯২৭ সালে মুক্তি দেয়া হয়। এরপর তিনি বাংলা প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি হন। ১৯২৮ সালে কলকাতায় কংগ্রেস দলের ঐতিহাসিক সম্মেলনে সুভাষ কংগ্রেস স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান হিসেবে কাজ করেন। ১৯২৯-এ সুভাষ ছিলেন বাংলা প্রাদেশিক কংগ্রেস সম্মেলনের সভাপতি। তিনি ওই একই বছর নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের সভাপতি ও পরের বছর কলকাতা করপোরেশনের মেয়র হন।

১৯৩০ সালে তিনি গান্ধীর লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনে অংশ নেন এবং এ জন্য তাকে আবার কারারুদ্ধ করা হয়। জেল থেকে মুক্তি লাভের পর তিনি ১৯৩১-এর গান্ধী-আরউইন চুক্তির বিরোধিতা করেন। ১৮১৮ সালের কুখ্যাত ১১১ প্রবিধানের আওতায় তিনি তৃতীয়বারের মতো গ্রেপ্তার হন। কারাগারে তার স্বাস্থ্যের এমন অবনতি ঘটে যে স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি মুক্তি লাভ করেন এবং চিকিৎসার জন্য ইউরোপ যান। ১৯৩৮ সালে সুভাষ সর্বসম্মতিক্রমে কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৩৯ সালের এপ্রিলে তিনি কংগ্রেস সভাপতি পদে ইস্তফা দেন। সুভাষ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তিকে সমর্থন করেন। ১৯৪০ সালের জুলাই মাসে সুভাষচন্দ্র বসুকে কলকাতার হলওয়েল মনুমেন্ট অপসারণ আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। কারাবন্দি থাকাকালে তিনি অনশন ধর্মঘট শুরু করেন এবং ডিসেম্বর মাসে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। ১৯৪১ সালের ২৬ জানুয়ারি সুভাষ গোপনে কলকাতা ত্যাগ করেন ও রাশিয়ায় প্রবেশ করেন। ১৯৪৩ সালের ২৫ আগস্ট সুভাষ আইএনএ-র সর্বাধিনায়ক হন। ২১ অক্টোবর অস্থায়ী আজাদ হিন্দ সরকার গঠনের কথা ঘোষণা করেন। ১৯৪৪-এর মার্চ মাসে তিনি তার এ অগ্রাভিযানে ইম্ফল ও কোহিমায় দুটি ব্রিটিশ সামরিক চৌকি দখল করেন ও সেখানে স্বাধীন ভারতের পতাকা উত্তোলন করেন। ১৯৪৫ সালের আগস্ট মাসে ফরমোজায় এক বিমান দুর্ঘটনায় সুভাষ নিহত হন বলা হয়ে থাকে। [সংগৃহীত]