মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ পা। এগুলো কেবল আমাদের সোজা রাখতে ও চলাফেরা করতে সহায়তা করে তা নয়, অন্যান্য অংশে আমরা কতটা সুস্থ, তাও নির্দেশ করে। পায়ের যত্ন নেয়া কতটা অপরিহার্য, তা সর্বসাধারণের জন্য নিশ্চিত করতে প্রতি বছর ৮ অক্টোবর বিশ্বে আন্তর্জাতিক পেডিয়াট্রি দিবস পালিত হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক পেডিয়াট্রি দিবসের পেছনে রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব পেডিয়াট্রিস্ট। ফেডারেশন ১৯৪৭ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী পোডিয়াট্রি বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে নিবেদিত একটি অলাভজনক সংস্থা হিসেবে কাজ করছে। অন্তত ৩০টি দেশ এর সদস্য। সংগঠনগুলো গবেষণা, চর্চা ও জ্ঞান নিয়ে নিত্য মতবিনিময় করে।
পেডিয়াট্রি দিবস পালনের সর্বোত্তম উপায় হলো পায়ের প্রতি যতœশীল ও সচেতন হওয়া। পা আমাদের শরীরে এমন একটি অংশ যা শরীর সচল রাখে। অতি গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও অনেকে পায়ের যতœ নিতে অবহেলা করেন। একপর্যায়ে পায়ে নানারকম সমস্যা দেখা দেয়। ডায়াবেটিক রোগীর ক্ষেত্রে এ সমস্যা প্রকট হয়ে ধরা দেয়।
আমাদের উচিত হবেÑক. পায়ের যতœ নেয়া; খ. পা সব সময় পরিষ্কার ও শুকনো রাখা; গ. সঠিক মাপের জুতা পরিধান করা; ঘ. সময়মতো ও সঠিক নিয়মে নখ কাটা; ঙ. পায়ের যেকোনো ছোট-বড় সমস্যা বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগীদের অবহেলা না করা; চ. পায়ের ত্বক আর্দ্র এবং পা ফাটা থেকে রক্ষা করা।
পৃথিবীতে যত মানুষের পা কেটে ফেলার প্রয়োজন পড়ে, তার প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশই ডায়াবেটিক ফুট আলসারের কারণে। এতেই বোঝা যায়, ডায়াবেটিক ফুট আলসার কতটা ভয়াবহ। সেজন্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিজের পা বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে এবং এটি প্রতিরোধে সঠিক ব্যবস্থা নিতে হবে।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে ডায়াবেটিক ফুট আলসারের ঝুঁকি কমানো যায়। পায়ের তলা দেখতে প্রয়োজনে আয়না বা পরিবারের অন্য সদস্যদের সাহায্য নিন। নখের গোড়ায়, কোনায়, আঙুলের ফাঁকে, পায়ের পাতা বা তলা ফেটে যাওয়া, লাল হওয়া, ফুলে যাওয়া, ফোসকা পড়া, চামড়া শক্ত হওয়া বা যেকোনো পরিবর্তন লক্ষ করলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। পায়ের স্বাভাবিক রক্ত চলাচলের জন্য দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার সময় চেয়ার বা মোড়ার ওপর পা রাখতে হবে। পায়ের আলসারের সামান্য লক্ষণ দেখতে পেলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।
গ্রন্থনা: আবদুল মকিম চৌধুরী