Print Date & Time : 2 August 2025 Saturday 6:39 pm

আজ খুলছে বান্দরবানের পর্যটনকেন্দ্রগুলো

এমএ শাহরিয়ার, বান্দরবান: নো মাস্ক নো সার্ভিস শর্তারোপে বান্দরবানে দীর্ঘদিন পর সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্প খুলছে আজ। ইতোমধ্যে সরকারিভাবে পর্যটন স্পট এবং আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট খুলে দেয়ার ঘোষণায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মালিক শ্রমিকরা।

জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের পরিচালিত অন্যতম দর্শনীয় স্থান নীলাচল, মেঘলা, চিম্বুক, প্রান্তিকলেক, নীল দিগন্ত, বগালেক, সেনাবাহিনী পরিচালিত নীলগিরি, তমা তুঙ্গী এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত স্বর্ণ মন্দির, রামজাদী পর্যটন স্পটগুলো।

অন্যদিকে বৃষ্টিতে পাহাড়ের আকর্ষণীয় ঝরনাগুলো পিচ্ছিল ও বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সদরের শৈলপ্রপাত, রুপালি ঝরনা, ফারুকপাড়া ঝরনা, আমতলী ঝরনা, রুমা উপজেলার রিজুক ঝরনা, জাদীপাই ঝরনা, তিনাপ সাইতার, চিংড়ি ঝরনা। থানচি উপজেলার নাফাকুম, অমিয়কুম, সাতভাইকুম, রেমাক্রী জলপ্রপাত, বাকলাই ঝরনা, আলীকদম উপজেলার দামতুয়া ঝরনা, করুকপাতা ঝরনা ও রোয়াংছড়ি উপজেলার দেবতাকুম। ঝুঁকিপূর্ণ পর্যটন স্পটগুলোয় বেড়াতে আসা পর্যটকদের এবং স্থানীয় ট্যুরিস্ট গাইডদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

বননিবাস রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আইয়ুব ও নীলাচল ফরেস্ট হিল রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী সায়েদুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার (আজ) থেকে সরকার পর্যটন স্পট এবং আবাসিক হোটেল, রিসোর্টগুলো খুলে দিয়েছে। এটি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং ঘরবন্দি ভ্রমণপিপাসুদের জন্য একটা দারুণ খবর। কভিডের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনে পর্যটন বন্ধ থাকায় পর্যটন শিল্পে ধস নেমেছে। দীর্ঘদিন পর পর্যটন শিল্প খুলে দেয়ায় রিসোর্টের সবকিছু ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হচ্ছে। সরকারি বিধিনিষেধ মেনে পর্যটকদের বরণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি তারা নিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো বুকিং পায়নি তারা।

জেলা আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, পর্যটন খুলে দেয়ার খবরে প্রাণ ফিরেছে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। চাকরি হারানো শ্রমিকরাও ফিরতে শুরু করেছেন কর্মস্থলে। সরকারিভাবে আজ থেকে পর্যটন স্পট এবং আবাসিক হোটেলগুলো খুলে দিলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। সরকারি নির্দেশনা মেনে আবাসিক প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখা হবে। ইতোমধ্যে মুষ্টিমেয় কিছু আবাসিক হোটেল এবং রিসোর্টে কয়েকটি করে রুম বুকিংয়ের খবর পেয়েছি।

ট্যুরিস্ট গাড়ি শ্রমিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল বলেন, পর্যটন স্পটগুলো বন্ধ থাকায় পর্যটক নির্ভর কয়েক শতাধিক ট্যুরিস্ট গাড়ির শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক কষ্টে ভুগছেন। ভাড়া না থাকায় বেকার দিন কাটাচ্ছেন তারা। পর্যটকদের আনাগোনা বাড়লে পরিবহন চালক শ্রমিকদের সংসারেও স্বচ্ছলতা ফিরবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টরেট (এনডিসি) জাকির হোসেন জানান, শর্তসাপেক্ষে জেলার সব পর্যটন স্পট এবং আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট খুলে দেয়া হচ্ছে। শর্তগুলোর মধ্যে, নো মাস্ক সার্ভিস প্রধানতম। মাস্ক ছাড়া কেউই কোনো পর্যটন স্পট ও আবাসিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় ঢুকতে পারবেন না। পরিবারের লোকজন একই কক্ষে একাধিক জন থাকতে পারলেও অন্যদের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। ইতোমধ্যে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী হোটেল, রেস্টুুরেন্ট মালিক, পরিবহন এবং পর্যটন স্পটগুলোর দায়িত্বে নিয়োজিতদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা জেলা প্রশাসন থেকে দেয়া হয়েছে। শর্তগুলো মানা হচ্ছে কি না নজরদারি করবে প্রশাসন। শর্ত লঙ্ঘন করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে দোষীদের বিরুদ্ধে।