আজ থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়ল ১০ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল বেতনের শতকরা পাঁচ ভাগ বিশেষ প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২৫ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সমাপনী আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন। 

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলে জানা গেছে। এখন একটি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হবে অর্থমন্ত্রীর কাছে। এরপর তা অনুমোদনের জন্য যাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। জুলাইয়ের মধ্যেই সব কাজ শেষ হবে।

সূত্রমতে, সরকারি কর্মচারীরা সাধারণভাবেই ৫ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) পাওয়ার কথা। এখন যোগ হবে আরও ৫ শতাংশ। অর্থাৎ আজ (১ জুলাই) থেকে মূল বেতনের ১০ শতাংশ টাকা পাবেন তারা। 

প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, ‘সরকারি কর্মচারী যারা আছেন, তাদের বিশেষ প্রণোদনা হিসাবে মূল বেতনের ৫ শতাংশ এই আপৎকালীন সময়ে প্রদানের বিষয়টি বিবেচনার জন্য অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি। আশা করি, অর্থমন্ত্রী এ বিষয়টি গ্রহণ করবেন। আমরা ৫ শতাংশ মূল বেতন বিশেষ প্রণোদনা হিসাবে তাদের দেব।’ 

বাজেট ঘোষণার আগেই মে মাসের মাঝামাঝি এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধি করা হবে। বার্ষিক বৃদ্ধি ৫ শতাংশ ও নতুন প্রণোদনা ৫ শতাংশ মিলিয়ে মূল্যস্ফীতি সমন্বয় হবে।

জানা গেছে, বাড়তি ৫ শতাংশের জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বাড়তি ব্যয় হবে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা। বাড়তি প্রণোদনা এককালীন নয়, বরং প্রতি মাসের বেতনের সঙ্গেই যোগ হবে। অর্থ বিভাগের চেষ্টা থাকবে জুলাই শেষে যখন জুলাই মাসের বেতন তুলবেন সরকারি কর্মচারীরা, তার মধ্যে বাড়তি প্রণোদনাটা যেন থাকে। জুলাইয়ের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ না হলে তা আগস্টে গড়াবে। তবে বাড়তি বেতন জুলাই থেকেই কার্যকর।

২০১৫ সালের বেতন কমিশনে বলা ছিল, প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) হবে সরকারি কর্মচারীদের। সে অনুযায়ী তা হয়েও আসছে। জানা গেছে, ২০১৫ সালে মূল্যস্ফীতির হার গড়ে ৫ শতাংশ ছিল বলেই ইনক্রিমেন্ট একই হারে বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছিল। এখন মূল্যস্ফীতি বেশি বলেই ইনক্রিমেন্টের হার বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

আগামী অর্থবছরের জন্য বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ, যদিও গত মে মাসের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ২০১৫ সালের বেতন কাঠামোর সুপারিশ সরকার না মানার কারণেই বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি সম্প্রতি নতুন করে সামনে এসেছে। সেই বেতন কাঠামোতে বলা হয়, সরকারি কর্মচারীদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশ হবে। তবে মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশের বেশি হলে বেতন বৃদ্ধির হারও সে অনুযায়ী বাড়বে, তবে বাস্তবে তা মানা হচ্ছিল না।

বাজেট সংক্ষিপ্ত–সার ২০২৩-২৪ অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮১ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা। বাড়তি প্রণোদনার জন্য অর্থ নেয়া হবে থোক বরাদ্দ থেকে।