নিজস্ব প্রতিবেদক: পায়রার পর এবার ভারতের আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে দেশজুড়ে চলমান লোডশেডিং আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে শিগগির সরবরাহ পুনরায় চালুর আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ অংশে সঞ্চালন লাইনে সমস্যার কারণে গতকাল বুধবার বেলা আড়াইটার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় বলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সদস্য (উৎপাদন) এসএম ওয়াজেদ আলী সরদার জানান।
গণমাধ্যমকে ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘আদানির বিদ্যুৎ আনার জন্য স্থাপিত সঞ্চালন লাইন বেলা ২টা ৪৬ মিনিটের দিকে ট্রিপ নিয়ে গেছে।
আমাদের আশা, শিগগিরই আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে।’
ভারতের ঝাড়খণ্ডে আদানি গ্রুপ ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে। এই বিদ্যুৎ বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে রহনপুর পর্যন্ত আনতে ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ৪০০ কেভির সঞ্চালন লাইন আছে। ওই লাইনে বিদ্যুৎ রহনপুর পর্যন্ত আনার পর তা বগুড়া হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সঞ্চালন করতে একই ক্ষমতার আরেকটি লাইন আছে।
ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কয়েক মাস ধরে গড়ে প্রায় ৭৫০-৮০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ পেয়ে আসছিল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।
পিডিবির জনসংযোগ পরিচালক শামীম হাসান বলেন, ‘ঝড়ের কারণে রহনপুরে লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। মেরামতের সময় সঞ্চালন লাইন ট্রিপ করে। তবে রাত ১০-১১টার মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ আবারও সচল করতে চেষ্টা চালাচ্ছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা।’
ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ডিপিডিসি ও ডেসকো জানিয়েছে, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় ঢাকার লোডশেডিং বেড়েছে প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট।
ডিপিডিসির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘হঠাৎ জাতীয় গ্রিড থেকে ৭৫০ মেগাওয়াট বেশি বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় লোডশেডিং বেড়েছে দেশের সব জায়গায়। শুধু ডিপিডিসি এলাকায় লোডশেডিং বেড়েছে ২০০ মেগাওয়াট।’
এর আগে কয়লার তীব্র সংকটে গত সোমবার পায়রায় অবস্থিত ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন পুরো বন্ধ হয়ে যায়। একই কারণে বহু আগে থেকেই একই সক্ষমতার রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রও খুবই কম উৎপাদন করছে। এর ফলে দেশব্যাপী চলমান লোডশেডিং আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের হিসাব রাখার একমাত্র রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) একটি সূত্র জানিয়েছে, সোমবার সারাদেশে গড়ে প্রায় চার হাজার মেগাওয়াটের মতো লোডশেডিং হয়েছে। তার মধ্যে বেলা ৩টায় লোডশেডিং চার হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যায়।
পিজিসিবি এক কর্মকর্তা বলেন, ওইদিন বেলা ৩টার সময় সারাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৫ হাজার ৭৯ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ ছিল ১১ হাজার মেগাওয়াট। লোডশেডিং হয়েছে ৪ হাজার ৭৯ মেগাওয়াট।