নিজস্ব প্রতিবেদক : নাগরিকদের সংরক্ষিত এনআইডির তথ্য ফাঁস হওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় ব্র্যাক ব্যাংক, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ‘যাচাই সেবা’ সাময়িক বন্ধ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির এনআইডি উইং মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর গতকাল বুধবার এ তথ্য জানান।
এএসএম হুমায়ুন কবীর বলেন, গত মঙ্গলবার মনিটরিংয়ে আনসার ভিডিপি ও ব্র্যাক ব্যাংক থেকে আমাদের তথ্য ফাঁসের বিষয়টি ধরা পড়ে। এ দুটো প্রতিষ্ঠান । সাময়িকভাবে ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের যাচাই সেবা বন্ধ করা হয়েছে। এরই মধ্যে তথ্য ফাঁসের ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানান ডিজি। এনআইডি অনুবিভাগ থেকে ১৮৬টি প্রতিষ্ঠান তথ্য যাচাই সেবা নিতে ইসির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ রয়েছে।
সবশেষ গত ফেব্রুয়ারি এনআইডি সেবা গ্রহণকারী তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য ফাঁস হওয়ার ঘটনার পর পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের সেবাও বন্ধ রয়েছে। এবার আরও দুটি প্রতিষ্ঠানে তথ্য ফাঁসের প্রমাণ পাওয়া গেল।
এনআইডি উইং মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর বলেন, আমরা গত মঙ্গলবার জানতে পারি-ডেটা নিরাপত্তার স্বার্থে দৈনন্দিন যে চেকিং থাকে, প্রতিষ্ঠানগুলোকে দিয়েছি। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়মিত মনিটরিং করি। মনিটরিংয়ে গত মঙ্গলবার তথ্য আসে, মনিটরিংয়ে ধরা পড়ে দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের তথ্য ফাঁসের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তখন আমরা একটু কনসার্ন হই, যারা মনিটরিংয়ে ছিলেন তারা আরও ভালোভাবে চেক করেন।
এই কর্মকর্তা বলেন, যে লিঙ্ক থেকে তথ্য ফাঁস হচ্ছিল বলে জানতে পারি, সেখানে ক্লিক করলে এ দুটো প্রতিষ্ঠান আনসার ভিডিপি ও ব্র্যাক ব্যাংক।
তথ্য ফাঁস যে কোনোভাবেই বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে তথ্য ফাঁসের ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানান এনআইডি ডিজি।
ডিজি জানান, পরবর্তী চুক্তি অনুযায়ী যা করার করা হবে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। যে কোনো মূল্যে দেশের নাগরিকের তথ্য যা ইসিতে সংরক্ষিত; তা রক্ষা করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
এদিকে ব্র্যাক ব্যাংকের এক বিবৃতিতে কোম্পানিটির হেড অব কমিউনিকেশন ইকরাম কবীর এ বিষয়ে জানিয়েছেন, ‘এনআইডি যাচাইয়ের সুযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে নির্বাচন কমিশন’ শীর্ষক সংবাদে নির্বাচন কমিশনের সূত্র উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে যে, ব্যাংকের মাধ্যমে এনআইডি ডেটাবেজের তথ্য হ্যাক করার চেষ্টা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ব্র্যাক ব্যাংক সবাইকে আশ্বস্ত করছে, আমাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা স্বাভাবিকভাবেই কাজ করেছে। ব্যাংকের সিস্টেমের মাধ্যমে এনআইডি ডেটাবেজের কোনো তথ্য বাইরে যায়নি।
ব্র্যাক ব্যাংকের টেকনোলজি অবকাঠামো অত্যন্ত মজবুত ও দুর্ভেদ্য, যা যে কোনো হ্যাকিংয়ের চেষ্টা প্রতিরোধে সক্ষম। টেকনোলজি অবকাঠামো একটি দক্ষ ও পেশাদার টিমের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকে। নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে ব্র্যাক ব্যাংক তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত শুরু করেছে। ব্যাংক দায়ী বা দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে কাজ শুরু করেছে।
ব্র্যাক ব্যাংক নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে, যাতে খুব দ্রুত এনআইডি সার্ভারের অ্যাক্সেস পুনরায় চালু করা হয় বলেও জানিয়েছেন তিনি।