Print Date & Time : 5 July 2025 Saturday 10:02 pm

আপনার কিডনি কি সুস্থ আছে

কিডনির রোগ বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম কারণ। বিশ্বে প্রায় ৮৫ কোটি মানুষ কোনো না কোনো কিডনির রোগে আক্রান্ত। এ দেশে প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ লোক এ রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে প্রতিবছর প্রায় ৪০ হাজার রোগী ডায়ালাইসিসের ওপর নির্ভরশীল হন। আরও ২৪ থেকে ৩০ হাজার রোগী হঠাৎ কিডনি বিকল হয়ে সাময়িক ডায়ালাইসিসের শরণাপন্ন হন। অন্য সব রোগের তুলনায় কিডনি বিকল হওয়ার চিকিৎসাব্যয় বেশি। কিডনির রোগের প্রধান কারণ হলো অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, নেফ্রাইটিস, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, ব্যথানাশক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার, জš§গত ও বংশগত কিডনির রোগ, মূত্রতন্ত্রের প্রদাহ ও পাথর। প্রায় প্রতিটি কারণই আমাদের অস্বাস্থ্যকর জীবনধারার সঙ্গে যুক্ত, যা একটু সচেতন হলেই প্রতিরোধ করা যায়।

উপসর্গ ও লক্ষণ: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৭০ থেকে ৯০ ভাগ নষ্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত কিডনি বিকল হওয়ার কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা যায় না। তবে যেসব লক্ষণ বা উপসর্গ থাকলে কিডনি আক্রান্ত বলে মনে করতে হবে, সেগুলো হলো প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া বা এর রং পরিবর্তন, পা, গোড়ালি ও চোখের নিচে ফোলা ভাব, অবসাদ ও দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, বমি-বমি ভাব বা বমি, বিনা কারণে গা চুলকানো, রাতে বারবার প্রস্রাব, প্রস্রাবে ফেনা বা রক্ত, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও ঘনঘন প্রস্রাব, মেরুদণ্ডের কোনো এক পাশে বা তলপেটে ব্যথা ইত্যাদি। এসব লক্ষণের বাইরে শিশুদের জš§গত কোনো ত্রুটি আছে কি না, তা পরীক্ষা করানো এবং প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা জরুরি।

প্রতিরোধের উপায়: কিডনি একবার সম্পূর্ণ বিকল হলে বেঁচে থাকার উপায় হলো ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপন। কিন্তু এর খরচ এত বেশি যে এ দেশের শতকরা ১০ ভাগ রোগীও তা বহন করতে পারেন না।

সুস্থ জীবনধারা চর্চার আট উপায়: নিয়মিত ব্যায়াম করা ও সচল থাকা। কমপক্ষে দিনে ৩০ মিনিট এবং সপ্তাহে পাঁচ দিন জোরে হাঁটা। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের কিডনির কার্যকারিতা ছয় মাস অন্তর পরীক্ষা করা। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ও তীব্র ব্যথার ওষুধ সেবন না করা। পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করা। পানিশূন্যতা পরিহার করা।

ডা. এমএ সামাদ

অধ্যাপক, কিডনি রোগ বিভাগ

আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল