শেয়ার বিজ ডেস্ক: আফগান নারীদের মানবিক কার্যক্রমে অনুমতি দেয়ার জন্য নতুন নির্দেশিকা তৈরির পরিকল্পনা করছে তালেবান। আফগানিস্তানের মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনার বরাত দিয়ে এ কথা বলেছেন জাতিসংঘের এক সিনিয়র কর্মকর্তা। খবর: বিবিসি।
গত মাসে এনজিওতে আফগান নারীদের কাজ নিষিদ্ধ করেছে দেশটির সরকার। সেই আদেশ পুরোপুরি প্রত্যাহার না হলেও ‘উৎসাহজনক প্রতিক্রিয়া’ পাওয়া গেছে বলে জানান জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা-বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মার্টিন গ্রিফিথস।
গ্রিফিথস জানান, চলতি বছরই আফগানিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সহায়তা কর্মসূচি পরিচালিত হবে।
সংস্থাগুলো দেশটির জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি প্রায় দুই কোটি ৮০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে, যার মধ্যে রয়েছেন দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে থাকা ৬০ লাখ আফগান।
চলতি বছরে আফগানিস্তান এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ঠাণ্ডা শীতকাল দেখছে। এরই মধ্যে ১৫৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে গত সপ্তাহে নারী ইস্যুতে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল আমিনা মোহাম্মদ। সংস্থার সর্বোচ্চ পদমর্যাদার এ নারী কর্মকর্তা জানান, বর্তমান পরিস্থিতিকে খুব কাছ থেকে দেখতে তাদের এই সফর। শিক্ষা ও কাজের ক্ষেত্রে নারীদের প্রবেশাধিকার সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বার্তা তারা তালেবান কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দিতে এসেছেন।
গত ডিসেম্বরে নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ নিষিদ্ধ করে তালেবান প্রশাসন। আফগানিস্তানের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নারী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এর পরই এনজিওতে নারীদের কাজে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
তালেবানের অর্থনীতি মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদেল রহমান হাবিব দাবি করেছেন, বিদেশি সাহায্য সংস্থার নারী কর্মীরা হিজাব না পরে পোশাকের নিয়ম ভঙ্গ করেছে।
নারী কর্মীদের কাজে নেয়ার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা হলে এনজিওর লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়েছে তালেবান।
কেয়ার, এনআরসি ও সেভ দ্য চিলড্রেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, নারী কর্মীদের ছাড়া ২০২১ সালের আগস্ট থেকে দুর্দশাগ্রস্ত লাখো আফগানের কাছে সহায়তা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হতো না।
জাতিসংঘের মানবিক কার্যক্রমের শীর্ষ সমন্বয়কারী রমিজ আলাকবারভ বলেছেন, জাতিসংঘ নারী কর্মীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার চেষ্টা করছে। তিনি বিবিসিকে বলেন, তালেবান কর্তৃপক্ষ নারী ত্রাণকর্মীদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে জাতিসংঘ আফগানিস্তানে মানবিক সাহায্য বিতরণ বন্ধ করে দিতে পারে।