শামসুল আলম, ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ে আমন ধানে পাক ধরার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। এমনিতেই এবার প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হওয়ায় ইঁদুর ক্ষেতের কাঁচা ধানগাছ কেটে সাবাড় করেছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৪৯ হাজার ৩৯৫ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে এক লাখ ৩৬ হাজার ৯২৫ হেক্টর জমি। এর মধ্যে সদর উপজেলায় আবাদ হয়েছে ৫১ হাজার ৫১০ হেক্টর জমি, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ২২ হাজার ৮৯৫ হেক্টর জমিতে, রানীসংকৈলে ২১ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে, পীরগঞ্জে ২৪ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে এবং হরিপুর উপজেলায় আমন ধান আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে।
কৃষি বিভাগের হিসাবে চাষকৃত জমি থেকে প্রায় তিন লাখ ৫৮৮ টন চাল উৎপাদন হবে, যা ধানে চার লাখ ৬২ হাজার ৪৪৩ টন। হিসাব অনুযায়ী প্রতি একরে ধান উৎপাদন হওয়ার কথা ৪৫ মণ, কিন্তু এ পর্যন্ত পাঁচ উপজেলায় আগাম জাতের ধান কাটা হয়েছে ৮৪০ হেক্টর, যার হেক্টরপ্রতি ফলন চার দশমিক ২২ টন।
সদর উপজেলার ভেলাজান গ্রামের কৃষক আবদুর রশিদ জানান, ১০ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করেছেন। তার মধ্যে পাঁচ বিঘা জমিতে আগাম ধান ধানিগোল ও কমল ধান চাষ করেছেন। বাকি পাঁচ বিঘা জমিতে সুমন স্বর্ণ জাতের ধান চাষ করেছেন। কিন্তু এ বছর ঠিকমতো বৃষ্টি না হওয়ায় বিপাকে পড়তে হয়েছে। কিছুদিন আগে ধানক্ষেত ভালোই ছিল। কিন্তু হঠাৎ ধান কাটার আগ মুহূর্তে জমিতে কারেন্ট পোকা ও ইদুরের আক্রমণে ঝামেলায় পড়েছেন। প্রতিষেধক প্রয়োগ করেও তেমন কাজ হচ্ছে না।
ঠাকুরগাঁও অঞ্চলের কৃষক নজরুল ইসলাম, হাসানুর আলী, মনসুর আলীসহ একাধিক কৃষক জানান, কীটনাশক প্রয়োগ করেও কারেন্ট পোকা পুরোপুরিভাবে দমন করা যাচ্ছে না। কৃষি বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, শেষ মুহূর্তে কারেন্ট পোকার আক্রমণে কৃষকদের চিন্তিত না হয়ে ভালো মানের কীটনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন।
ঠাকুরগাঁও কৃষি বিভাগের উপপরিচালক আফতাব হোসেন জানান, ধানসহ বিভিন্ন ক্ষেতে পোকার আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচানের লক্ষ্যে কৃষকদের মাঠপর্যায়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে চিন্তিত হওয়ার কিছুই নেই।