আমরা জাতিকে কলঙ্ক ও দায়মুক্তকরতে চাই : আ ক ম মোজাম্মেল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘আমরা জাতিকে কলঙ্ক ও দায়মুক্ত করতে চাই। শহিদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা যদি আমরা করতে না পারি তবে দায়মুক্ত হবে না। আমরা আমাদের দায় এড়াতে চাই না’মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এ কথা বলেন।

গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে প্রজন্ম ৭১ আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর: আমাদের যত অর্জন ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা দায় মুক্ত হতে চাই। বুদ্ধিজীবীদের তালিকা যদি করতে না পারি, তবে দায়মুক্ত হবো না। আমরা দায় এড়াতে চাই না, পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করতে চাই। আপনাদের অনুরোধ করব, কারও কাছে কোনো তথ্য থাকলে তা দিয়ে সহায়তা করুন।’

তিনি বলেন, ‘পণ্ডিত হলেই কেউ বুদ্ধিজীবী হবে না। বুদ্ধিজীবী হতে হলে স্বাধীনতার স্বপক্ষে কথা বলতে হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘ধর্ম নিয়ে রাজনীতি এখনও চলছে। গত ২৬ মার্চ নরেন্দ্র মোদি এলে তখন ধর্মের নামে হেফাজত ইসলাম যা করেছে তা

 আপনারা দেখেছেন। আমরা যারা দেশ জয় করেছি, তারা জয়ের আনন্দে সব ভুলে গিয়েছি। অথচ পাকিস্তানের দোসররা পরাজয়ের গ্লানি ভুলে যাননি। তারা এখনও এ দেশেই আছেন। আলবদর, আলশামস এরা এখনও আমাদের মাঝে রয়ে গেছেন। এদের তালিকা করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। তালিকা না করতে পারায় এরা আমাদের মাঝে মিশে গেছে।’

মোজাম্মেল হক বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর মোস্তাক-জিয়াসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের দ্বারা দেশ পরিচালিত হওয়ায় প্রায় ৩০ বছরই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ চলে নাই।

আমাদের বয়স ৫০ হলেও মূলত আমাদের বয়স ২১ কিংবা ২২ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে মোস্তাক-জিয়া হত্যা করেছেন, এরা স্বাধীনতাবিরোধী। এরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে নাই। এরা ছিল অনুপ্রবেশকারী। চোর ডাকাতকেও হত্যা করলে বিচার হয়, অথচ বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার ইনডেমনিটি আইনের মাধ্যমে এরা বাদ দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর দায় এরা কখনও এড়াতে পারবে না।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পাঠ্যসূচিতে স্বাধীনতাবিরোধীদের চরিত্র তুলে ধরতে না পারায় এমনটি হয়েছে। পাকিস্তান বাহিনী কবে আত্মসমর্পণ করেছে এমন প্রশ্নে ৯০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উত্তর দিতে পারেনি।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন দেশ যদি স্বাধীন হয় তবে দেশের অর্থনীতির মুক্তি আসবে, সাংস্কৃতিক মুক্তি আসবে। রাজনৈতিক মুক্তিই সব নয়।

ভিআইপিরা গেলে রাস্তাঘাট বন্ধ হয় এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমাদের ঢাকা শহরে যে পরিমাণ রাস্তাঘাট প্রয়োজন তার ১০ ভাগের একভাগও নেই। এই এক ভাগ রাস্তা দিয়ে আমাদের ১০০ ভাগ লোককে চালাতে হচ্ছে। যতদিন পর্যন্ত মেট্রোরেল না হবে, আন্ডারপাস না হবে, আরও বহু সংখ্যক ফ্লাইওভার না হবে ততদিন কষ্ট করতেই হবে। রাস্তাঘাটে চলাফেরা কাউকে বাধা দেয়া হয় না। রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে কিছু কিছু লোককে নিরাপত্তার খাতিরে অনেক সময় রাস্তা বন্ধ করা হয়। তবে সেটা ঢালাওভাবে করা ঠিক হবে না।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন লেখক ও ব্লগার মারুফ রসুল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।