আমরা হাতি বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছি: বনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: হাতি বাঁচাতে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে নিয়ে এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে বনবিভাগের কর্মীদের আরও সক্রিয় হতে বলেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। গতকাল চট্টগ্রামের রুবী গেট এলাকায় ফরেস্ট একাডেমির এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘হাতি রক্ষার দায়িত্ব আমাদের। আমরা হাতি বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছি। সেই ব্যর্থতার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে।’ গত এক মাসে দেশে সাত-আটটি হাতি মারা গেছে এবং তার দায়িত্ব এড়ানো যায় না বলে মন্তব্য করেন পরিবেশমন্ত্রী। তিনি বলেন, কোনো অবস্থায় যেন এরকম অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে, সেজন্য জনসচেতনতা প্রয়োজন।

৩৮তম বিসিএসের নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী বন সংরক্ষকদের দুই মাসব্যাপী ওরিয়েন্টেশন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী।

বন বিভাগের হিসাবে, দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসরত হাতির সংখ্যা ২৬৮টি। এছাড়া ভারত ও মিয়ানমার থেকে দেড় শতাধিক হাতি বিভিন্ন সময়ে যাওয়া-আসা করে। গত ৩০ বছরে দেশে হাতি মারা গেছে ১৪২টি। এর মধ্যে ২০২০ সালে ২২টি ও ২০২১ সালে ১১টি হাতি মারা গেছে। শুধু চলতি বছরের নভেম্বর মাসেই মারা যাওয়া হাতির সংখ্যা আটটি।

হাতি যেন ফসল মাড়িয়ে নষ্ট না করতে পারে, সেজন্য ক্ষেতে বৈদ্যুতিক তারের ফাঁদ তৈরি করেন স্থানীয়রা। এরকম তারে জড়িয়ে মৃত্যুর পাশাপাশি বিভিন্ন সময় গুলি করে হত্যা করার ঘটনাও ঘটেছে। আবাসস্থল সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় খাবার নিয়ে হাতি আর মানুষের দ্বন্দ্বে একের পর এক এমন মৃত্যু এ প্রাণিটির জীবনযাত্রাকে আরও বেশি হুমকির মুখে ফেলছে।

এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বনমন্ত্রী বলেন, ‘হাতি যদি ফসলের ক্ষতি করে, তার ক্ষতিপূরণ আমার সরকার দিচ্ছে। তাহলে কেন সে হাতি মারবে? হাতি আমাদের মৌলভীবাজার এলাকাতেও আছে। ১৫-২০টা বন্য হাতি এক মাস যাবৎ আছে। ধানক্ষেতে হাতি নেমে ধান খেয়ে নেয়। লোকজন আমাদের বলে হাতি ধান খেয়ে নিচ্ছে। কিন্তু তারপরও তো হাতি মারে না। সেই ক্ষতিপূরণ আমরা দেয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি। মন্ত্রণালয় নিচ্ছে। মানুষকে একটু বুঝিয়ে বলা যে, ফসলের ক্ষতি করলে সে ক্ষতিপূরণ আমরা দিচ্ছি। আপনারা হাতি মারবেন না। হাতি মারলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্য হাতি হত্যা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য গত মাসে হাইকোর্ট থেকেও নির্দেশনা আসে।