আয়কর মেলার সেবা পাওয়া যাবে কর অঞ্চলে

নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে এবারও আয়কর মেলা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। গতকাল সেগুনবাগিচায় এনবিআর সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। মেলা না হলেও গতবারের মতো পুরো নভেম্বরজুড়ে করদাতাদের সেবা দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

সাধারণত কর মেলায় এক ছাদের নিচে সব ধরনের সেবা পান করদাতারা। ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত টানা ৯ বছর মাসব্যাপী আয়কর মেলার আয়োজন করে এনবিআর। তবে মহামারির কারণে ২০২০ সালে কর মেলা হয়নি।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘মহামারির কারণে সরাসরি কর মেলা করতে না পারলেও ১ থেকে ৩০ নভেম্বর পুরো মাসব্যাপী কর সংস্কৃতির বিকাশ, করদাতাদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কর সেবা প্রদান করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘নভেম্বরে দেশব্যাপী ৩১টি কর অঞ্চলের ৬৪৯টি সার্কেলে

অফিস চলাকালে নিরবচ্ছিন্নভাবে আয়কর রিটার্ন গ্রহণ করা হবে। একই সঙ্গে রিটার্ন দাখিল করা করদাতাদের তাৎক্ষণিক প্রাপ্তি স্বীকারপত্র দেয়া হবে। নভেম্বর মাসের কর সেবা উপলক্ষে করদাতাদের বেশ কিছু প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা হবে। এ জন্য বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।’

সেবাকেন্দ্রগুলোয় ইলেকট্রনিক ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর (ইটিআইএন) নিবন্ধন ও পুনঃনিবন্ধনের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রত্যেক কর অঞ্চলের ওয়েবসাইটে আয়কর-সংক্রান্ত বিভিন্ন ফরম, পরিপত্র, রিটার্ন পূরণের নির্দেশিকাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য সেবা রয়েছে এর মধ্যে।

তিনি জানান, সরকারি কর্মকর্তাদের রিটার্ন দাখিলের সুবিধার জন্য ১ থেকে ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশ সচিবালয় ও অফিসার্স ক্লাবে রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেল্প ডেস্ক থাকবে। এ ছাড়া সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের জন্য ঢাকা সেনানিবাসের সেনা মালঞ্চে ৯ ও ১০ নভেম্বর দুদিন রিটার্ন গ্রহণ ও কর বিষয়ে যাবতীয় তথ্য সেবা দেয়া হবে। মাসব্যাপী করসেবা উপলক্ষে ২৪ নভেম্বর ১৪১ জন সর্বোচ্চ করদাতাকে ট্যাক্স কার্ড দেয়া হবে। জেলা ও সিটি করপোরেশন পর্যায়ে ৬৬৬ জন সেরা করদাতাকে ক্রেস্ট, পরিচিত ও সম্মাননা সনদ দেয়া হবে।

ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের চারটি কর অঞ্চলে কেন্দ্রীয়ভাবে ও অন্য সব কর অঞ্চল নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় যথাযথ আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে জেলা ও সিটি করপোরেশনভিত্তিক সেরা করদাতা সম্মাননা দেবে। সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, আগামী ৩০ নভেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস উদযাপন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ইটিআইএন নিবন্ধন ২৬ শতাংশ বেড়েছে। বর্তমানে মোট ইটিআইএন রয়েছে প্রায় ৬৮ লাখ নাগরিকের। কর পরিশোধে অনলাইন সেবা ব্যাপকভাবে চালু করার আশাবাদ জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘কর জাল আমরা কাক্সিক্ষত পর্যায়ে উন্নীত করতে পারব বলে আমাদের বিশ্বাস।’

টিআইএন রেজিস্ট্রেশনের প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক হলেও রিটার্ন দাখিল সেই অর্থে বাড়েনিÑএমন প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, টিআইএন রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক হলেও আমরা এখনও কঠোর হচ্ছি না। আমরা চাই করদাতারা নিজ উদ্যোগে রিটার্ন দাখিল করুক। আমরা ডোর টু ডোর সার্ভে শুরু করেছি। করোনার কারণে যা বন্ধ ছিল।