আরও কয়েক দিন যান বন্ধ রাখার সুপারিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলমান লকডাউনে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ রেখেছে সরকার। সেই সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য ও মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগে গাজীপুরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দূরপাল্লার ৯৭টি বাসের চালক-মালিকের বিরুদ্ধে মামলা ও ১০টি গাড়ি ডাম্পিং করেছে।

গাজীপুর মহানগর ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার (উত্তর) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ঈদ শেষে বিভিন্ন পরিবহনে যাত্রীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে আবার কর্মস্থলে ফিরছেন। এসব যাত্রী নিয়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দূরপাল্লার কিছু বাস ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলাচল করছিল। রোববার বিকাল থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর মহানগরে অভিযান চালিয়ে এ ধরনের ৪৫টি বাসের চালক ও মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। পাশাপাশি রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগে আরও ১০টি গাড়িকে ডাম্পিং করা হয়েছে। ঈদের পর রোববার থেকে গাজীপুরের সড়ক-মহাসড়কে লোকাল বাস, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মিনিবাসসহ বিভিন্ন পরিবহনে ঈদফেরত মানুষের ভিড় লক্ষ করা গেছে।

সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দূরপাল্লার কিছু বাস ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলাচল করছিল। এ ব্যাপারে গাজীপুরের কোনাবাড়ীর সালনা মহাসড়ক থানার ওসি মীর গোলাম ফারুক বলেন, একই অভিযোগে চন্দ্রা ও কোনাবাড়ী এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দূরপাল্লার ৪৬টি বাসের চালক-মালিকের বিরুদ্ধে মামলা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় চারটি গাড়ি আটক করা হয়েছে।

মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, শ্রীপুর উপজেলার মাওনা-চৌরাস্তা এলাকায় রোববার সন্ধ্যায় দূরপাল্লার বাস যাত্রী নিয়ে চলাচলের চেষ্টা করলে ছয়টি বাসের চালকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

তবে মহাসড়কে লোকাল বাস, মিনিবাস, পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও অটোরিকশা চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। রোববার বিকাল থেকে এসব গাড়িতে ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলমুখী যাত্রীদের চাপ দেখা গেছে।

এদিকে কভিড-১৯ সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় দেড় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল। বাস মালিক-শ্রমিকরা যান চালুর দাবি তুললেও মহামারি পরিস্থিতি বিবেচনায় তার আরও ‘কিছু দিন’ বন্ধ রাখার পক্ষপাতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সংক্রমণ আরও কমিয়ে আনার লক্ষ্যে এ পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন বাস, ট্রেন, লঞ্চ বন্ধ আছে। আমরা প্রস্তাব করব এটাকে বন্ধ রাখতে।

সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত ও মৃত্যু লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এক বছর পর গত ৬ এপ্রিল পুনরায় বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। তখন থেকে দূরপাল্লার বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ। সেই বিধিনিষেধের মেয়াদ ২৩ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার।

এরপরও দূরপাল্লার গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে কি না সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে জাহিদ মালেক বলেন, ‘এটা ২৩ মে’র পরেও কি না, সেই সিদ্ধান্ত আমরা এখনই নিতে পারছি না। আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ থাকবে আরও বেশকিছু দিন সময় বন্ধ থাকার।’