মিজানুর রহমান শেলী: নিট দৃশ্যমান সম্পদ ব্যবহারকারী একটি কোম্পানি নিয়ে আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি। এবার একজন বিনিয়োগকারীকে কল্পনা করব। এই বিনিয়োগকারী, ধরুন প্রতি শেয়ারের মূল্য ১০০ ডলার হিসাব করে একটি স্টক ক্রয় করলেন। এ ১০০ ডলারের মধ্যে প্রতি শেয়ারে খ্যাতির প্রভাবের কারণে তাকে ৮০ ডলার খরচ করতে হয়েছে। একজন করপোরেট খরিদকারী হিসেবে তিনি এই পুরো কোম্পানিও কিনে নিতে পারেন। অর্থাৎ তিনি এ কোম্পানির ৮০ ভাগ আর্থিক খ্যাতি কিনলেন একই সঙ্গে। এখন প্রশ্ন থাকে, এই বিনিয়োগকারীর জন্য কি প্রতি শেয়ারে দুই ডলার অ্যামোর্টাইজেশন পরিশোধ করা উচিত? এটি নিশ্চয়ই বার্ষিক হিসাবের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলে। এখানে ৮০ ডলারকে ৪০ বছরের ওপর বিভাজন করে দেওয়া হয়। এর একমাত্র উদ্দেশ্য হলো প্রতি শেয়ারের সত্যিকার আয় হিসাব করে নেওয়া। এ হিসাব-নিকাশে যদি আয়টিকে সত্যিকার আয় বলে মনে হয়, তবে প্রতি শেয়ারে তিন ডলারের সত্যিকার নতুন আয় নিশ্চয়ই তাকে কিছু না কিছু ভাবাতে শেখাবে। তিনি ভেবে দেখবেন, এই শেয়ারের সত্যিকার কেনা দর কত হওয়া উচিত।
আমরা বিশ্বাস করি, ব্যবস্থাপক ও বিনিয়োগকারী উভয়েরই অদৃশ্য সম্পদের ব্যাপারে একই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি রাখা উচিত। আর এটা নিশ্চয়ই দুটি স্বতন্ত্র পরিপ্রেক্ষিত থেকে বিবেচিত হবে।
প্রথমত, পরিচালনা ফলাফল নিয়ে বিশ্লেষণ দাঁড় করানো: এখানে একটি ব্যবসা ইউনিটের ভিত্তি অর্থনীতির কাঠামো মূল্যায়ন করা হয়। সেজন্য অ্যামোর্টাইজেশন চার্জকে কোনোভাবেই গুরুত্ব দেওয়া হয় না। উপেক্ষা করা হয়ে থাকে। লিভারেজবিহীন নিট দৃশ্যমান সম্পদ আহরণের জন্য আমরা কী ধরনের ব্যবসা কাঠামো নির্মাণ করব—এটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। এখানে খ্যাতির প্রশ্নে অ্যামোর্টাইজেশনের জন্য আয়ের বিরুদ্ধে যে কোনো চার্জ হিসাব করা হয় না। আর এটাই হলো আর্থিক আকর্ষণীয়তা পরিচালনার পথনির্দেশনা। এমনকি এটাকে পরিচালনার আর্থিক খ্যাতির চলতি মূল্য নির্ধারণের পথনির্দেশনাও বলা চলে।
দ্বিতীয়ত, ব্যবসা অধিগ্রহণের প্রজ্ঞা মূল্যায়নে অ্যামোর্টাইজেশন চার্জ এখানে অবশ্যই উপেক্ষিত হওয়া উচিত। আবার এটাকে অবশ্যই আয়ের খাত থেকে কিংবা ব্যবসা খরচ থেকে বিয়োগ করা উচিত নয়। এর অর্থ দাঁড়ায়, ক্রয় খ্যাতির সারা জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি পরিপূর্ণ খরচের ওপরই নির্ভর করে। তবে তা অ্যামোর্টাইজেশন বাস্তবায়নের আগেই হতে হবে। উপরন্তু খরচকে এখানে কীভাবে নির্ধারণ করা হবে—সেটাও বড় প্রশ্ন। পরিপূর্ণ ইনট্রিনসিক বিজনেস ভ্যালু এখানে বেশ গুরুত্ববহ হয়ে ওঠে। খরচ নির্ধারণের সময় এই পরিপূর্ণ বিজনেস ইনট্রিনসিক ভ্যালুকে তাই অবশ্যই যুক্ত করতে হবে। প্রশ্ন হলো, এখানে কী রেকর্ডেড অ্যাকাউন্টিং ভ্যালুই একমাত্র কার্যকর রূপ লাভ করবে, নাকি এর সঙ্গে আরও কিছু শর্ত যুক্ত হবে। এর সঠিক জবাব হলো—না, যুক্ত হবে। যতগুলো শর্ত বা বিবেচনা সূত্র এখানে সংযুক্ত থাকবে, সেগুলো এখানে কার্যকর হবে। সেক্ষেত্রে একীভূতকরণের সময়ে সিকিউরিটিজের বাজারদর কেমন চলছে—সেটা বিবেচনা না করেই এবং পুলিং ট্রিটমেন্টকেও বিবেচনা না করে রেকর্ডেড ভ্যালুকে অনুমোদন দেওয়া হয়ে থাকে। এখানে একটি উদাহরণ দিতে চাই: আমরা ব্লু চিপ একীভূতকরণের সময়ে সি-এর খ্যাতির ৪০ শতাংশ পরিশোধ করেছিলাম। এমনকি সত্যিকার অর্থেই আমরা এটা কার্যকর উপায়ে সম্পন্ন করি। কিন্তু এর সংবাদটি ছিল অন্যরকমের। এখানে ৫১ দশমিক সাত মিলিয়নের বেশি ডলার সন্নিবেশিত করা হয়েছিল, যা আমাদের বইয়ের ওপরই নির্ধারিত হয়। হ্যাঁ, এটা একটি বৈসাদৃশ্য। কিন্তু এই বৈসাদৃশ্য কেন সংঘটিত হয়ে থাকে। কার্যত, বার্কশায়ারের বাজারমূল্যই এখানে মুখ্য বিষয়। একীভূতকরণের সময় বার্কশায়ারের শেয়ার বিলিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাদের ইনট্রিনসিক বিজনেস ভ্যালুর চেয়ে অনেক কমে। আর এই ইনট্রিনসিক বিজনেস ভ্যালুর গুরুত্ব ও অপরিহার্যতা নিয়ে আমি এর আগেও কিছুটা আলোচনা করেছি। বস্তুত এটাই আমাদের কাছে সত্যিকার খরচ বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।
যাহোক, পরিচালনা কাঠামো সফলতার দিকে ঝুঁকে পড়ে কয়েকটি বিবেচনার ভিত্তিতে। এগুলোর মধ্যে থাকে: ১. একই পরিপ্রেক্ষিত থেকে দেখলে এটাকে খুব মলিন দেখানোর সম্ভাবনা। ২. একটি ভালো ব্যবসা সব সময়ের জন্য ভালো কোনো খরিদকর্ম বলে বিবেচিত নাও হতে পারে। যদিও এটি কোনো ভালো অবস্থান খুঁজে নিতে চেষ্টা করে থাকে।
অধিগ্রহণকারীর নিট সম্পদের জিএএপি’র ওপর একটি প্রিমিয়ামের জন্য বার্কশায়ার যখন একটি ব্যবসা খরিদ করে, তখন বেশিরভাগ কোম্পানিই কেনার প্রতি আগ্রহ দেখাতে থাকে। এটি একটি প্রবণতার মতো মনে হয়। সাধারণত ঘটনাটি প্রায়ই ঘটে থাকে। তবে সেক্ষেত্রে কোনো ধরনের মূল্য হ্রাসের খবর থাকে না। মূল্য হ্রাস না হলেও সবাই এটি খরিদ করার জন্য ঝুঁকতে থাকে। এখন এই প্রিমিয়ামকে আসলে কোনো পক্ষে বিবেচনা করা যেতে পারে। বলা বাহুল্য, তাকে আমাদের ব্যালেন্স শিটের সম্পদ তালিকার মধ্যেই স্থান ছেড়ে দিতে হবে।
এখানে বিপুল পরিমাণ আইন-কানুন রয়েছে। রয়েছে নানা ধরনের রীতি ও আচার। এর সংখ্যা এত বেশি যে, মাঝে মাঝে অতিরঞ্জিত বলে মনে হতে পারে। আরও অবাক হওয়ার মতো বিষয় হলো, এত এত নিয়ম-কানুন আসলে একটি মাত্র বিষয়কে কেন্দ্র করে। আর তা হলো, একটি কোম্পানি কীভাবে তার প্রিমিয়ামকে রেকর্ড করবে, তার পদ্ধতি ও কৌশল। কিন্তু এ আলোচনাটিকে কি সরল ও সহজ উপায়ে করা যায় না? হ্যাঁ, এটাকে খুব সহজভাবে আমরা উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। আমরা কেবল খ্যাতির ওপরই আলোক সম্পাত করেছি। এটা হলো সম্পদের খাত, এখানে বার্কশায়ারের অধিগ্রহণ প্রিমিয়ামের বেশিরভাগ বিষয়-খাত বরাদ্দ করা হয়েছে। এখানে আমরা একটি উদাহরণ টানতে পারি: কিছুদিন আগে আমরা জিইআইসিও’র অর্ধেক অংশ অধিগ্রহণ করে নিয়েছি। তবে আমরা আগে কখনও এর মালিকানা লাভ করিনি। যাহোক, আমরা এখানে এক দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলারের আর্থিক খ্যাতি নথিবদ্ধ করেছিলাম।
তবে জিএএপি খ্যাতিকে অ্যামোর্টাইজড করাতে চায়। আর এ কারণেই এখানে তারা একটি সময়কাল দাবি করে থাকে। বলা হয়ে থাকে, এ সময়কালটি হলো ৪০ বছরের কম। অবশ্যই তা ৪০ বছরের বেশি হবে না। তাই জিইআইসিও’র খ্যাতির এক দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলারকে বিলুপ্ত করার জন্য আমরা বছরে ৪০ বিলিয়ন ডলারের চার্জ গ্রহণ করে থাকি এবং ভবিষ্যতেও চার্জ গ্রহণ করব। আর এই চার্জটি হলো আমাদের আয়ের বিপরীতে। এর পরিমাণটি অবশ্যই ট্যাক্স পরিশোধের উদ্দেশ্যে বাদ দেওয়ার মতো নয়। এ কারণেই এটা আমাদের ৪০ মিলিয়ন ডলার আয়ের মাধ্যমে প্রি-ট্যাক্স ও আফটার-ট্যাক্স দুটোকেই কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়ে থাকে।
এই দর্শন রচনাবলি সম্পাদনা করেছেন লরেন্স এ. কানিংহ্যাম
অনুবাদক: গবেষক, শেয়ার বিজ