মো. আসাদুজ্জামান নূর: এক দিন পরেই গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। টাকার অঙ্কেও লেনদেনের পরিমাণ আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। লেনদেন বিশ্লেষণ ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিকট ভবিষ্যতে মুনাফার লাভের সম্ভাবনায় খাতভিত্তিক বিনিয়োগ বেড়েছে। এ ছাড়া কভিড-১৯ নিয়ে শঙ্কা কাটিয়ে বিনিয়োগে ফেরার বিষয়টিও স্পষ্ট হচ্ছে।
এদিন লেনদেনে সবচেয়ে বড় লাফ দেখা গেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে। ডিএসইতে এক হাজার ৪৪৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে; যা আগের দিনের চেয়ে ২১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বেশি লেনদেন হয়েছে। লেনদেনের ১১ দশমিক ২৯ শতাংশই আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের। এক দিন আগেও তিন শতাংশের নিচে লেনদেন হওয়া খাতটি শীর্ষে উঠে আসে। গতকাল ৯৫ শতাংশ কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে খাতটিতে কোনো দরপতন দেখা যায়নি।
আগের দিনের মতোই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। যদিও এ খাতে গতকাল মাত্র ৪৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ কোম্পানির দরপতন ও ৪৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ হয়েছে।
কয়েকদিন থেকে লেনদেনের শীর্ষে থাকা বিবিধ খাতে গতকাল আগ্রহ কম ছিল বিনিয়োগকারীদের। খাতটির লেনদেন কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ। আগের দিনে এটি ছিল ১৪ দশমিক ২৬ শতাংশ। গতকাল ৪৬ শতাংশের দর বৃদ্ধি ও ৩০ শতাংশের দরপতন দেখা গেছে। এছাড়া ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ লেনদেন করে প্রকৌশল চতুর্থ ও ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ লেনদেন করে ব্যাংক পঞ্চম অবস্থানে ছিল। এর মধ্যে প্রকৌশলে বেশি দরপতন ও ব্যাংক খাতে দর বৃদ্ধি দেখা গেছে। এ ছাড়া জ্বালানি, পেপার, সিমেন্ট, ট্রাভেল, সিরামিকস, টেলিযোগাযোগ খাতেও দর বৃদ্ধি দেখা গেছে।
গতকাল ডিএসইতে মোট ৩৮০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৬টির, কমেছে ১৪৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৫৫টির। সিংহভাগ সিকিউরিটিজের দর বৃদ্ধির প্রভাবে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে সাত হাজার ৭২ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএস৩০ সূচক ২ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়েছে।
গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে গ্রামীণফোন। কোম্পানিটির শেয়ারদর শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৬ দশমিক ২২ পয়েন্ট। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট যোগ করেছে তিতাস গ্যাস। কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৬ দশমিক ০৫ শতাংশ। সূচকে ৪ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট যোগ করেছে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। এ ছাড়া সামিট পাওয়ার, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ও রেনাটা লিমিটেড সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে। সব মিলিয়ে এই দশ কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৫১ পয়েন্ট। বিপরীতে সূচক কমিয়েছে ওয়ালটন হাইটেক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, রবি, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, জিপিএইচ ইস্পাত, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এক্মি ল্যাবরেটরিজ ও ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এ ১০ কোম্পানির কারণে সূচক হ্রাস পেয়েছে ২৯ দশমিক ৭০ পয়েন্ট।