আর্থিক স্বচ্ছতা বাড়াতে নিরীক্ষার অনুমতি চায় আইসিএমএবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) দেশের নিরীক্ষা ব্যবস্থায় প্রতিযোগিতা বাড়াতে এবং স্বচ্ছতা উন্নত করতে তার পেশাদারদের বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের (এসএমই) আর্থিক নিরীক্ষা পরিচালনার কর্তৃত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) অডিটোরিয়ামে গতকাল মঙ্গলবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইসিএমএবি সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, পেশাদার ও প্রতিযোগিতামূলক নিরীক্ষার অভাবে আর্থিক তদারকিতে গুরুতর শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। খবর: ইউনেবি

মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিভিন্ন কোম্পানি প্রায় ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচার করেছে, কিন্তু বিদ্যমান নিরীক্ষা সংস্থাগুলোর সীমিত সক্ষমতা এবং অদক্ষতার কারণে এসব অনিয়ম নিরীক্ষায় ধরা পড়েনি।
মাহতাব বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান নিরীক্ষা ইকোসিস্টেম মূলত অকার্যকর, যার জাতীয় অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে।’

এ সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান যেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের পাশাপাশি আইসিএমএবি সদস্যদেরও এসএমই খাতের সংবিধিবদ্ধ নিরীক্ষা করার অনুমতি দেয়া হয়, যাতে এই খাতে আরও প্রতিযোগিতা ও দক্ষতা আসে।

এক প্রশ্নের জবাবে আইসিএমএবি সভাপতি স্পষ্ট করেন যে, আইসিএমএবি এবং ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। তিনি বলেন, উভয় প্রতিষ্ঠান দেশের আর্থিক সুশাসন জোরদার করার জন্য সম্প্রীতির সঙ্গে কাজ করতে পারে।

তিনি উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশ এখন ভারতের পর দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি, কিন্তু স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য যোগ্য নিরীক্ষক এবং নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অপর্যাপ্ত।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অ্যাক্ট ২০১৮-এর অধীনে গঠিত একটি পেশাদার সংস্থা এবং এটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়।’

ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট ২০১৫ অনুযায়ী, ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) এবং আইসিএমএবি উভয়কেই পেশাদার অ্যাকাউন্টিং সংস্থা (এফআরএ ২০১৫-এর ধারা ২(১৯)-এর অধীনে) হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে, উভয় প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের পেশাদার হিসাববিদ (এফআরএ ২০১৫-এর ধারা ২(১৮)-এর অধীনে) এবং উভয় প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষকদের নিরীক্ষক (এফআরএ ২০১৫-এর ধারা ২(১৩)-এর অধীনে) হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

বর্তমানে, আইসিএমএবির ১ হাজার ৮০০-এর বেশি সদস্য এবং ৩০ হাজারের বেশি নিবন্ধিত শিক্ষার্থী রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ১০০ জন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও), ২০০ জন প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) হিসেবে কাজ করেন এবং ২০০-এর বেশি সদস্য বিদেশে কর্মরত আছেন।

আইসিএমএবি সভাপতি বলেন, কোম্পানি আইন ১৯৯৪ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের সংবিধিবদ্ধ নিরীক্ষা (ধারা ২১২) এবং কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টদের কস্ট নিরীক্ষার (ধারা ২২০) অধিকার দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আইসিএমএবি’র প্রাক্তন সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম এফসিএমএ এবং মো. দেলোয়ার হোসেন এফসিএমএ, সহসভাপতি মো. কাউসার আলম এফসিএমএ এবং সচিব হাসনাইন তৌফিক আহমেদ এফসিএমএসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।