ইউএইতে ১০ শতাংশ বেতন বাড়ানোর পরিকল্পনা

শেয়ার বিজ ডেস্ক: অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ২০২২ সালে ১০ শতাংশ বেতন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। এজন্য চলতি বছরের ‘এক্সপো ২০২০’-সহ কয়েকটি বড় ইভেন্ট প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে বলে এক জরিপে গতকাল জানিয়েছে দেশটির মানবসম্পদ-বিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কুপার ফিচ। খবর: খালেজি টাইমস।

জরিপে দেখা গেছে, দেশটির প্রায় ৪১ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ২০২১ সালে বেতন বাড়িয়েছিল। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে মানবসম্পদ, উৎপাদন ও প্রযুক্তিসহ সরকারি অনেক খাত।

অন্য খাতের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বাড়িয়েছিল।

আগামী বছর আরব আমিরাতের ৪৩ শতাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বেতন বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে, যাদের মধ্যে ৩৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বাড়াবে বলে জানিয়েছে। চার শতাংশ প্রতিষ্ঠান ছয় থেকে ৯ শতাংশ

এবং পাঁচ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ১০ শতাংশ বা তার বেশি বেতন বাড়াতে পারে।

প্রায় ৩৭ শতাংশ স্থানীয় প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, আসছে বছরে কর্মীদের বেতনভাতা পুনর্নিরীক্ষা করার পরিকল্পনা নেই।

আরও আশ্চর্যের বিষয়, প্রায় ১৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, তারা ২০২২ সালে ১০ শতাংশ বেতন কমাবে।

কুপার ফিচের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ট্রেফর মারফি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল। ২০২০ সালের কভিড-১৯ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশটি ২০২১ সালে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালে এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি। এমনকি চলতি বছরকে ছাড়িয়ে যাবে নতুন বছর। বছরের প্রথম প্রান্তিকে এক্সপোর মতো বড় ইভেন্ট আয়োজন করা হবে। এছাড়া কাতারে অনুষ্ঠিতব্য ‘ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ২০২২’ আমাদের দেশের বেশ কয়েকটি খাতে প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে পর্যটন ও আতিথেয়তা খাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বিশ্বকাপ।

জরিপে দেখা গেছে, ২০২১ সালে ৬৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বোনাস দিয়েছে। এ হিসেবে এর আগের বছরের তুলনায় বেশ ভালো অবস্থানে ছিল প্রতিষ্ঠানগুলো। সে বছর ৪৪ শতাংশ বোনাস দেয়া হয়েছিল।

জরিপে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী বছর বোনাস দেয়া এবং এর আগের বোনাস পরিশোধের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। ৭৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তারা ২০২২ সালে বোনাস পরিশোধ করবে। ৪৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান যাদের এক থেকে দুই মাসের বেতন বাকি রয়েছে এবং ২১ শতাংশ প্রতিষ্ঠান যাদের তিন থেকে পাঁচ মাসের বেতন বকেয়া, তারাও বছরের শুরুতে তা পরিশোধ করবে।

এদিকে ২৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান আগামী বছর বোনাস দেবে না, এমনকি বকেয়া বেতনও পরিশোধে আগ্রহী নয়। বিশেষ

আর্থিক ঝুঁকিতে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে নারাজ।

মারফি জানিয়েছেন, কভিড-১৯ প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ২০২১ সাল ছিল অর্থনীতি পুনরুত্থানের বছর, যার প্রভাব পড়েছে দেশের সার্বিক কর্ম খাতে। এ ধারা অব্যাহত থাকার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।

কুপার ফিচের জরিপ অনুযায়ী, প্রায় ৩০ শতাংশ সংস্থা তাদের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বেতন, বোনাস ও আনুষঙ্গিক খাতের খরচ কাটছাঁট করেছে।

একই সময় চলতি বছর প্রায় ৫২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এ পর্যায়ে কোনো পরিবর্তন আনেনি। তাদের মধ্যে মাত্র ১৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠান উচ্চপদস্থ কর্মীদের বেতন ও অন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়েছে।

২০২২ সালে ২৩ শতাংশ সংস্থা তাদের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা কমাবে। একই সময় ৫৯ শতাংশ সংস্থা তাদের সুযোগ-সুবিধা ১০ শতাংশ এবং তার বেশি বাড়াবে বলে জানিয়েছে।