ইউক্রেনের সামরিক ঘাঁটিতে হামলা, কিয়েভ জুড়ে ব্যাপক গোলাবর্ষণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের সামরিক ঘাঁটিতে হামলা করেছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। সেইসঙ্গে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির রাজধানীজুড়ে ব্যাপক গোলাবর্ষণও শুরু হয়েছে।

শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনের সেনা কর্তৃপক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। তবে রুশ বাহিনীর এই হামলা ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ফেসবুকে পোস্ট করে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাজধানী কিয়েভজুড়ে কামানের গোলাবর্ষণের ব্যাপক শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। তবে শহরের ঠিক কোথায় গোলাবর্ষণ হচ্ছে সেটি এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।

এদিকে, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত দেশটির ৫০ হাজারের বেশি মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তাদের অধিকাংশই পার্শ্ববর্তী পোল্যান্ড এবং মলদোভায় আশ্রয় নিয়েছেন।

অন্যদিকে পৃথক এক প্রতিবেদনে ইন্টারফ্যাক্স ইউক্রেন এজেন্সি জানিয়েছে, রাশিয়ার সেনারা কিয়েভের একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র দখল করার চেষ্টা করেছে।

প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে প্রকাশিত এই ভিডিওবার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘সকল ফ্রন্টের নারী ও পুরুষ প্রতিরোধ যোদ্ধাকে আমি বলবো। আমাদের প্রতিরোধকে ব্যর্থ করে দিতে বিশ্বাসঘাতক, কঠোর এবং অমানবিক উপায়ে আজ রাতেই সর্বশক্তি দিয়ে হামলা চালাবে শত্রুরা। ইউক্রেনের বহু শহরে রাশিয়ার হামলা হচ্ছে। (কিন্তু) আমরা রাজধানী হারাতে পারি না।’

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, একটি প্রধান শহরে তাদের ঘাঁটির কাছে রাশিয়ান বাহিনীকে প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে একটি সেনা ইউনিট।

এর আগেই রাশিয়ার কিয়েভ দখলের চেষ্টার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। শহরের স্থানীয় প্রশাসনও নিশ্চিত করেছে যে, রাজপথে লড়াই চলছে। তারা লোকজনকে বাড়িতে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছে।

কিয়েভভিত্তিক বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স-ইউক্রেনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কর্তৃপক্ষ লোকজনকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলেছে। এছাড়া যারা ঘরে অবস্থান করছেন তাদের দরজা-জানালা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা পরিষদের সেক্রেটারি ওলেকসি ড্যানিলভ ইউক্রেনের একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, পরিস্থিতি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

ড্যানিলভ বলেন, আমরা সব ধরনের উপায় ব্যবহার করে রুশ সেনাদের প্রতিহত করছি। এখনও সেনা সদস্য এবং নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কিয়েভ।

ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর কমান্ডও শনিবার সকালে কিয়েভের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ভেসিলকিভ বিমানঘাঁটির কাছে শক্তিশালীয় লড়াইয়ের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। রাশিয়ান প্যারাট্রুপাররা আক্রমণ করেছে বলেও জানানো হয়। রাশিয়ার একটি বিমান তাদের যোদ্ধারা গুলি করে ভূপাতিত করেছে বলেও দাবি করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামো ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওপর হামলা শুরু করে রাশিয়া। দ্বিতীয় দিনেই রাশিয়ার সেনারা দেশটির রাজধানী কিয়েভে পৌঁছে গেছে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামো ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওপর হামলা শুরু করে রাশিয়া। দ্বিতীয় দিনেই রাশিয়ার সেনারা দেশটির রাজধানী কিয়েভে পৌঁছে গেছে।