নিজস্ব প্রতিবেদক: আইন লঙ্ঘন করে শেয়ার বিক্রির অভিযোগে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের উদ্যোক্তা-চেয়ারম্যান ও এমডি ক্যাপ্টেন (অব.) তাসবীরুল আহমেদ চৌধুরীসহ ১২ জনকে এক কোটি ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। অন্যদিকে অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড না মেনে ডেফার্ড ট্যাক্স দায় হিসেবে না দেখিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ও শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) অতিমূল্যায়িত করার অভিযোগে বিতর্কিত কোম্পানিটিকে সতর্কও করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিএসইসির কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের কোম্পানি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ২০১২ সালের জুন শেষ হওয়া আর্থিক বছর ও ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া প্রথম প্রান্তিকে অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড মেনে ডেফার্ড ট্যাক্স দায় হিসাবভুক্ত করেনি। এতে কোম্পানিটির ইপিএস ও এনএভি অতিমূল্যায়িত হয়ে বাজারকে প্রভাবিত করেছে। তাই ওই আর্থিক বিবরণীতে কোম্পানির প্রকৃত তথ্য সঠিকভাবে উঠে আসেনি। এটি বিদ্যমান নিয়ম-কানুনের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। এর জের ধরে কমিশন সভায় কোম্পানিটিকে নিয়ম মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছে। সেইসঙ্গে কোম্পানিটিকে সতর্কও করেছে বিএসইসি।
এদিকে কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা নিষেধাজ্ঞাকালীন শেয়ার লেনদেন করেছে। সেইসঙ্গে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশের আগে তা অবগত হয়ে শেয়ার কেনাবেচা করে সিকিউরিটিজ ও একচেঞ্জ কমিশন (সুবিধাভোগী ব্যবসা নিষিদ্ধকরণ) বিধিমালা, ১৯৯৫ লঙ্ঘন করেছে। এ সিকিউরিটজ আইন ভঙ্গের জন্য কমিশন সভায় তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী, মো. আশিক মিয়া, মো. ইউসুফ চৌধুরী, মধুরীস আলী, সিদ্দিকা আহমেদ, খন্দাকার মাহমুজুর রহমান ও তাহমিনা বেগমকে ১০ লাখ করে জরিমানা করা করেছে বিএসইসি। একইভাবে সুবিধাভোগী ব্যবসা নিষিদ্ধকরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে তাসবীরুল আহমেদ চৌধুরী এবং খন্দকার তাছলিমা চৌধুরীকে ২০ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছে সংস্থাটি।
এছাড়া ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের শেয়ার লেনদেনে করে পুঁজিবাজারে কারসাজির অভিযোগে বিনিয়োগকারী সৈয়দ সিরাজউদ্দৌলা, আবু সাদাত মো. সায়েম ও ইয়াকুব আলী খন্দকারকে ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছে বিএসইসি।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে তালিকাভুক্ত হয় ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ। আইপিওর মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করা কোম্পানিটি তালিকাভুক্তির এক বছর পরই ১:১ অনুপাতে প্রিমিয়ামসহ রাইট শেয়ার ছেড়ে দ্বিতীয় দফায় পুঁজিবাজার থেকে আরও প্রায় ৩১৫ কোটি টাকা তুলে নেয়। কিন্তু দফায় দফায় অর্থ উত্তোলনের পর অবস্থার উন্নতি হয়নি। উল্টো সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। গত চার বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা প্রায় ৪৬ কোটি ১২ লাখ টাকা বা প্রায় ৭০ শতাংশ কমেছে। উড্ডয়ন-অযোগ্য উড়োজাহাজসহ বেশ কিছু প্রতিকূলতার কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে এটির ফ্লাইট পরিচালনা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।