নিজস্ব প্রতিবেদক: কোরিয়ার ইনচনে গতকাল ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ডের (ইডিসিএফ) অর্থায়নে ২০২৩-২০২৭ মেয়াদে তিন বিলিয়ন ডলারের নমনীয় ঋণ সহায়তার কাঠামো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তির আওতায় বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বৃহৎ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। এ ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্টের আওতায় যেসব ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হবে তার প্রতিটির বার্ষিক সুদের হার হবে ০.০১ থেকে ০.০৫ শতাংশ। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ৪০ বছর এবং গ্রেস পিরিয়ড ১৫ বছর। অবশ্য প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে বার্ষিক সুদের হার ০.৫ থেকে ১.০ শতাংশ এবং ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ২৫ বছর (৭ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ)। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
একই সময়ে বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং কোরিয়ার অর্থনীতি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (লাইন-৪) প্রকল্পের বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এ প্রকল্প ইডিপিই ও ইডিসিএফের যৌথ অর্থায়নে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন ডিএমটিসিএল বাস্তবায়ন করবে।
এছাড়া রেলপথ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘রিপ্লেসমেন্ট অ্যান্ড মর্ডানাইজেশন অব সিগনালিং অ্যান্ড ইন্টারলর্কি সিস্টিম অব ঈশ্বরদী-পার্বতীপুর সেকশন ইন ওয়েস্ট জোন অব বাংলাদেশ রেলওয়ে’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৬১ মিলিয়ন ডলার ঋণের এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীনে বিআরটিসির প্রকিউরমেন্ট অব সিএনজি সিঙ্গেল ডেকার এসি বাস ফর বিআরটিসি শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৭৭ দশমিক ৪৪ মিলিয়ন ডলার ঋণ চুক্তিও একই দিন স্বাক্ষরিত হয়। এ ঋণের সুদহার ০.০১ শতাংশ (নমনীয়) এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদ সাড়ে ৪০ বছর। এর মধ্যে সাড়ে ১৫ বছর গ্রেস পিরিয়ড রয়েছে।
বর্ণিত কাঠামো চুক্তি ও ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-৪) শীর্ষক প্রকল্পের এমওইউতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান এবং কোরিয়া সরকারের পক্ষে দেশটির অর্থনীতি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রথম ভাইস মিনিস্টার কিসুন ব্যাং স্বাক্ষর করবেন।
‘রিপ্লেসমেন্ট অ্যান্ড মর্ডানাইজেশন অব সিগনালিং অ্যান্ড ইন্টারলর্কি সিস্টিম অব ঈশ্বরদী-পার্বতীপুর সেকশন ইন ওয়েস্ট জোন অব বাংলাদেশ রেলওয়ে’ ও প্রকিউরমেন্ট অব সিএনজি সিঙ্গেল ডেকার এসি বাস ফর বিআরটিসি শীর্ষক প্রকল্পের ঋণ চুক্তিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং কোরিয়া সরকারের পক্ষে কোরিয়া এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও প্রেসিডেন্ট হে-সাং উন স্বাক্ষর করেন।
কোরিয়া সরকার তাদের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা কোরিয়া এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং তথ্য প্রযুক্তির প্রসারে নমনীয় ঋণসহায়তা দিয়ে আসছে। ইতোমধ্যে কোরিয়া সরকারের সহায়তায় ৬৬৪ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন ডলারে মোট ১৭টি প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে। এছাড়া ৬১৬ দশমিক ২৮ মিলিয়ন ডলারের সাতটি প্রকল্প বর্তমানে চলমান রয়েছে। কোরিয়া সরকার এ পর্যন্ত বাংলাদেশকে প্রায় ১৪৪৯ দশমিক ০৩ মিলিয়ন ডলার নমনীয় ঋণ মঞ্জুর করেছে, যা তার উন্নয়ন অংশীদার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।