Print Date & Time : 17 July 2025 Thursday 9:48 pm

ইন্টারনেটের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে আনতে উদ্যোগ নিন

তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে বর্তমানে বিশ্বে যোগাযোগব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। যোগাযোগব্যবস্থা এতটা সহজ হয়েছে যে, গোটা বিশ্ব একটি গ্রামের মতো ছোট ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এতে সবচেয়ে বড় অবদান ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনের। আমাদের দেশেও এ দুই ধরনের সেবার যাত্রা শুরু হয়েছে তিন দশক হতে চলল। কিন্তু মোবাইল অপারেটর ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা কাক্সিক্ষত মানের সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। উল্টো গ্রাহকদের থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ইন্টারনেটের দাম না কমালে আমাদের বাকি বিশ্বের থেকে পিছিয়ে পড়ার শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

‘বাংলাদেশে ইন্টারনেটের মূল্য ভারতের চারগুণ!’ শিরোনামে গতকালের দৈনিক শেয়ার বিজে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ কোটিতে। এর প্রায় ৯৪ শতাংশই মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। তবে এ খাতের সীমিত সংখ্যক অপারেটরের কাছে ব্যবহারকারীরা অনেকটা জিম্মি থাকায় কমছে না ইন্টারনেটের মূল্য। প্রতিবেশী দেশ ভারতের চেয়ে আমাদের ইন্টারনেটের মূল্য চারগুণ বেশি। তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির যুগে ইন্টারনেট নিয়ে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা গ্রহণযোগ্য নয়। ইন্টারনেটের মূল্য অবশ্যই যৌক্তিক পর্যায়ে আনতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

মানুষের দৈনন্দিন কাজ থেকে শুরু করে পড়াশোনা, ব্যবসা-বাণিজ্য, আর্থসামাজিক কর্মকাণ্ডের অনেক কিছু এখন ইন্টারনেট ও মোবাইলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এর আওতা সম্প্রসারিত হচ্ছে। ফাইল আদান-প্রদান থেকে শুরু করে ভয়েস কল, সামাজিক যোগাযোগসহ অনেক কিছুই ইন্টারনেটের মাধ্যমে হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশে ফোরজি সেবা চালু হয়েছে, প্রক্রিয়াধীন আছে ফাইভজি। এভাবে সংখ্যাগত সেবার মান বাড়লেও কাক্সিক্ষত সেবা গ্রাহকরা পাচ্ছেন না। অথচ সরকারের কাছ থেকে অপারেটররা নানা ধরনের সুবিধা আদায় করে নিচ্ছেন। কিন্তু গ্রাহক সেবার মান বাড়াচ্ছেন না বা ব্যর্থ হচ্ছেন, যা গ্রহণযোগ্য নয়।

এটা সত্য যে, ভারতের বাজার বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বড়। এছাড়া ইন্টারনেটের বাড়তি দামের জন্য অপারেটররা কিছু কারণ সামনে আনছেন। তবে তাদের মতো সেবা নিশ্চিত করা আমাদের দেশে অসম্ভব নয়। গ্রাহকদের অভিযোগ, সরকার ব্র্যান্ডউইডথ ও ফাইবারের দাম অনেক কমালেও সুবিধা মিলছে না। অনেকে মনে করছেন, অপারেটর ও ইন্টারনেট সেবাদাতারা শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে বাড়তি মুনাফা করছেন। এ অভিযোগ সত্য হলে তার অবসান হওয়া জরুরি। গ্রাহকসেবার কথা মাথায় রেখে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি ও সরকারকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। পাশাপাশি অপারেটরগুলো আরও দায়িত্বশীল হবে বলে প্রত্যাশা।