Print Date & Time : 19 July 2025 Saturday 5:03 pm

ইমরান খানই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থাকছেন

শেয়ার বিজ ডেস্ক: তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের আগ পর্যন্ত পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। গত রোববার মধ্যরাতের পর জারি করা এক বিবৃতিতে এ খবর জানায়

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট দপ্তর। খবর: ডন ও এশিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ইসলামী প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানের সংবিধানের ২২৪-এর ৪ অনুচ্ছেদের অধীনে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত ইমরান আহমেদ খান নিয়াজি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বহাল থাকবেন। এ হিসেবে আরও ১৫ দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন ইমরান। এছাড়া সব ঠিক থাকলে তিন মাসের মধ্যে ভোট হতে চলেছে পাকিস্তানে।

টুইটে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভী জানান, ইমরান খান আপাতত প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই দায়িত্ব পালন করবেন। তবে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেয়ায় এখন তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী কীভাবে নিয়োগ দেয়া হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করেননি তিনি। গত রোববার দিনভর নাটকীয়তা দেখা যায় পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে। দিনের শুরুতেই জাতীয় পরিষদে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে খারিজ করে দেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি। পরে ইমরান খানের অনুরোধে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট। গতকাল প্রেসিডেন্ট কর্তৃক পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হওয়ার কথা ছিল। ডেপুটি স্পিকারের খারিজের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় বিরোধী দল। প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়াল জানান, জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন, সেগুলো আদালতের আদেশের আওতায় আসবে। বিলাওল ভুট্টো জারদারি টুইটে ডেপুটি স্পিকারের সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেন। গত বছরের মার্চের পর চলতি বছর মার্চেও পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে পেশ হয় অনাস্থা প্রস্তাব। সেই ধারাবিহকতায় গত রোববার প্রস্তাব পেশ হওয়ার মিনিট খানেকের মধ্যে ডেপুটি স্পিকার ওই প্রস্তাব খারিজ করে দেয়ায় আপাতত টিকে যান ইমরান খান। এরপর দেশবাসীর উদ্দেশে দেয়া ভাষণে পাকিস্তানের নাগরিকের কাছে প্রধানমন্ত্রী কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, দেশ কোন পথে এগোবে, দেশের গন্তব্য কী হবে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকারী একমাত্র দেশের নাগরিকরা। কোনো বিদেশি শক্তি বা স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। তাদের সেই অধিকার নেই। এছাড়া দেশবাসীকে ভোটের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়ার কথা বলেন তিনি।

ইমরান খান কয়েক দিন ধরে তার সরকারের পতন ঘটানোর জন্য বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা বলে আসছিলেন। একপর্যায়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলেন। এবার তিনি এই ‘বিদেশি ষড়যন্ত্রে’ জড়িত যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকের নাম সরাসরি জানালেন। যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক ডোনাল্ড লু তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে জড়িত বলে জানান তিনি। ইমরানের ভাষ্য, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসাদ মজিদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ডোনাল্ড লু। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এদিকে ইমরান খানকে নিয়ে পাকিস্তানে কী সিদ্ধান্ত হয়, তা স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো অবস্থান নিতে চাইছে না নয়াদিল্লি। বরং অপেক্ষা করা হচ্ছে সে দেশের সেনাবাহিনী ও সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছায় তার ওপর। কেননা

পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জটিলতা বহু স্তরের। তবে ইমরান সরে  গেলেও ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে তার বিশেষ প্রভাব পড়বে না।

পাকিস্তানে দ্রুত পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক ঘটনাবলির ওপর নজর রাখছে চীন। স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে থাকার আহ্বানও জানিয়েছে চীন।

গতকাল দ্বিপক্ষীয় সমস্যা মেটাতে আলোচনার ওপর জোর দিয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া।