শেয়ার বিজ ডেস্ক: রেকর্ড দরপতন হয়েছে ইরানি মুদ্রা রিয়ালের। গত শনিবার অনানুষ্ঠানিক বাজারে এক ডলারের বিনিময়মূল্য ছিল চার লাখ ৪৭ হাজার রিয়াল। আগের দিন শুক্রবার এটি ছিল চার লাখ ৩০ হাজার ৫০০ রিয়াল। খবর: আল জাজিরা।
বিভিন্ন কারণে বেশ কয়েকদিন ধরে অস্থিতিশীল ইরানি মুদ্রা। এরই মধ্যে বৈদেশিক বিনিময় সাইট বনবাস্ট ডটকম জানিয়েছে, শনিবার ডলারের বিপরীতে রিয়ালের মান কমেছে রেকর্ড পরিমাণে।
এমন পরিস্থিতির জন্য অবশ্য শত্রুদের দুষছে ইরান।
দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর মোহাম্মদ রেজা ফারজিনের দাবি, তেহরানকে অস্থিতিশীল করতে শত্রুদের কর্মকাণ্ডের ফলে এমন দরপতনের ঘটনা ঘটেছে।
মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় ইরানের নাগরিকরা সঞ্চিত মুদ্রা দিয়ে ডলার অথবা স্বর্ণের মতো মূল্যবান ধাতব বস্তু কিনে রাখছেন।
ইরানের বিরুদ্ধে বিদ্যমান অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা রিয়ালের দরপতনের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচনা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে দেশটির বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা ও তেহরানের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নানা বিধিনিষেধকে রিয়ালের দরপতনের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচনা করছেন তারা। এদিকে তেহরানের বিরুদ্ধে চতুর্থ দফায় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে আলোচনা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
এছাড়া পারমাণবিক আলোচনায় তেহরানের অনীহা এবং বিক্ষোভকারীদের প্রতি সহিংস আচরণের ফলে ইইউ’র সঙ্গে তেহরানের সম্পর্ক আরও শীতল হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহ এবং বিক্ষোভকারীদের প্রতি সহিংস আচরণের দায়ে ইরানের বিপ্লবী গার্ডকে জঙ্গিগোষ্ঠী ঘোষণার কথা বলেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।
চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র ফের ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এবার ইরানের ড্রোন প্রস্তুত এবং সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠানের ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। কুদস অ্যাভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিজের (কিউএআই) ছয় নির্বাহী ও বোর্ড সদস্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ হেফাজতে ২২ বছরের কুর্দি নারী মাহসা আমিনির মৃত্যুতে দেশব্যাপী আন্দোলনের পর রিয়ালের মুদ্রামান ২৯ শতাংশ কমে যায়। এ ঘটনার জেরে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। ইরানের নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানজুড়ে সেপ্টেম্বর থেকে চলা ব্যাপক অস্থিরতায় দুইশ’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।