নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ই-কমার্স খাতের কর অব্যাহতিসহ ১১টি বিষয় বিবেচনার দাবি জানিয়েছে আইসিটি খাতসংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশনগুলো। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, ই-কমার্স, ফাইবার অপটিকস, এনটিটিএন, তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে কর মওকুফ।
গতকাল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন নিজেদের দাবিগুলো তুলে ধরেন তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি মো. শাহীদ-উল-মুনির, ইন্টারনেট সার্ভিসেস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এমএ হাকিম ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্য) সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসাইন।
বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, সামগ্রিকভাবে বাজেট নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। গতবারের তুলনায় আইসিটি খাতে বরাদ্দ বেড়েছে। এছাড়া প্রথমবারের মতো ব্যবসা শুরুর উদ্যোগে (স্টার্টআপ) উদ্যোক্তাদের জন্য ১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যেটি প্রশংসার দাবিদার।
বাজেটে ই-কমার্স খাতের ওপর ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাটের আপত্তি জানিয়ে বেসিস সভাপতি বলেন, ‘এই খাতে এখন অনেক ছেলেমেয়ে কাজ করছে। উদীয়মান এই খাতের বিকাশে এই ভ্যাট প্রত্যাহার করা অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশের ই-কমার্স একটি নতুন সম্ভাবনাময়ী খাত। এ খাতে এখনই কর আরোপ করলে বেশি দূর এগোতে পারবে না। বরং এ খাত করমুক্ত করে ভবিষ্যৎ তরুণ উদ্যোক্তাদের কাজে লাগাতে হবে। অত্যন্ত আগামী পাঁচ বছরের জন্য ই-কমার্স খাত করমুক্ত রাখা দরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবকিছু মিলে বাজেট ভালো হলেও আইসিটি খাতের কিছু বিষয় নিয়ে আমাদের আপত্তি আছে। কিছু জায়গায় নতুন করে ভ্যাট ও ট্যাক্স আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে। এই খাতের উন্নয়নে আমরা সেগুলোর পরিবর্তন চাই।’
তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যের ওপর আগাম কর অব্যাহতি চেয়ে বিসিএস সভাপতি মো. শাহীদ-উল-মুনির বলেন, ‘সেবার কোডের ওপর আগের পাঁচ শতাংশ মূসক থাকলেও এবার তা বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। আমরা চাই এক্ষেত্রে আগের পাঁচ শতাংশ বহাল রাখা হোক। এছাড়া ২৪ ইঞ্চি পর্যন্তু কম্পিউটার মনিটর মূসকমুক্ত রাখা হোক।’
ফাইবার অপটিক কেব্লের ওপর পাঁচ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি এবং এনটিটিএন সংযোগের ওপর থেকে পাঁচ শতাংশ মূসক প্রত্যাহারের দাবি জানান আইএসপিএবি সভাপতি এমএ হাকিম। তিনি বলেন, ফাইবার অপটিক এবং এনটিটিএনের মাধ্যমে ডেটা ট্রান্সমিশন খরচ এমনিতেই অনেক বেশি, যে কারণে ঢাকার বাইরে ইন্টারনেটের দাম বেশি হয়। তার ওপর ভ্যাট ও কর আরোপ ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়াতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।
উল্লেখ্য, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি বা আইসিটি খাতে ১৫ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে আইসিটি বিভাগের জন্য বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে এক হাজার ৯২০ কোটি টাকা। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এবারের বরাদ্দই এ খাতের সর্বোচ্চ।