অধিক জনসংখ্যার দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার কাজটি সহজ নয়। ঈদে অসংখ্য মানুষের কেনাকাটার ভিড় ও ঘরে ফেরার ব্যস্ততার সময় লক্ষ্য করে অপরাধীচক্র কৌশলে পরিবর্তন আনে। তাই পুলিশ প্রশাসন তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীসহ সাধারণ মানুষকেও নিজ নিজ অবস্থান থেকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, যথার্থভাবে দায়িত্ব পালন করতে হয়। অপরাধীর সংখ্যা সমাজে খুব বেশি নয়। প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ প্রশাসন সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নিয়েছে। যেমন—আসন্ন ঈদুল ফিতরে বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিতে নগরবাসীকে ১৪টি নির্দেশনা মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার নির্দেশনায় বলা হয়, ঈদুল ফিতর উৎসবমুখর ও নিরাপদ পরিবেশে উদ্যাপনের লক্ষ্যে এবং ঈদে বাসাবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানের সার্বিক নিরাপত্তায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে ডিএমপি। পুলিশকে সহায়তায় এরই মধ্যে অক্সিলারি পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে।
ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি ঈদে বাসাবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিতে নগরবাসীকে ১৪টি নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধও জানিয়েছে ডিএমপি। এগুলো হলো—বাসাবাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, ব্যাংক-বিমাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত নিরাপত্তারক্ষীদের ডিউটি জোরদার করতে হবে এবং যেকোনো অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা নজরদারির ব্যবস্থা রাখতে হবে। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে একসঙ্গে ছুটি প্রদান না করে একটি অংশকে দায়িত্বপালনে নিয়োজিত রাখা যেতে পারে, যাতে তারা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বিক তদারক করতে পারেন। বাসাবাড়ি ও প্রতিষ্ঠান ত্যাগের আগে দরজা-জানালা সঠিকভাবে তালাবদ্ধ করে যেতে হবে। প্রয়োজনে একাধিক তালা ব্যবহার করা যেতে পারে। দরজা-জানালা দুর্বল অবস্থায় থাকলে তা মেরামত করে যথাসম্ভব সুরক্ষিত করতে হবে। বাসাবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে এবং স্থাপিত সিসি ক্যামেরা সচল থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। বাসাবাড়ির মূল দরজায় অটোলক ও নিরাপত্তা অ্যালার্মযুক্ত তালা ব্যবহার করা যেতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সরকারি সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিশেষ করে পুলিশ অবশ্যই নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নেবে। আমাদের উচিত তাদের দায়িত্ব পালনে সাহায়তা করা। আমাদের মনে রাখতে হবে ঈদের আনন্দ পরিপূর্ণ হওয়ার সঙ্গে আমাদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত। বাসা থেকে দূরে কোথাও যেতে হলে বাসাবাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমাদের করণীয় আছে। ঈদের ছুটিতে লোকজনহীন বাসাটিতে চুরিরসহ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। বাসাবাড়িতে অবস্থানকারী দূরে থাকলেও বাসা যাতে নিরাপদ থাকে, সে লক্ষ্যে ঈদযাত্রার প্রস্তুতির সঙ্গে সেটিও বিবেচনায় রেখে সর্বাত্মক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিলে ঈদ আনন্দ নিরঙ্কুশ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।