প্রতিনিধি, জবি: ঈদে শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বাস। বিভিন্ন কারণে যে সব শিক্ষার্থী ঢাকায় আটকে আছে আগামী ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের আবেদন করতে হবে। গতকাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক আব্দুল বাকি স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকায় অবস্থানরত ঈদের ছুটিতে ঢাকা ছাড়তে ইচ্ছুক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্ব-হস্তে নি¤œলিখিত তথ্যাদি উল্লেখপূর্বক প্রক্টর ও পরিচালক (ছাত্র-কল্যাণ) বরাবর একটি আবেদনপত্র জমাদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। কোনো শিক্ষার্থী সরাসরি আবেদনপত্র জমা দিতে না পারলে তাদের চেয়ারম্যান/বিভাগীয় প্রধানের ই-মেইলে সফটকপি প্রেরণ করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী ১৩ জুলাই পর্যন্ত সশরীরে আবেদন করা যাবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত প্রক্টর ও ছাত্রকল্যাণ অফিসে আবেদন জমা দিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেন, শিক্ষার্থীরা হাতে লিখে সশরীরে আবেদন জমা দিতে পারবে। যারা সশরীরে আবেদন দিতে পারবে না, তারা বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন দেবে। চেয়ারম্যান কোন ফরম্যাটে আবেদন নেবে এটা তিনিই ঠিক করবেন। আবেদন লিখে ছবি তুলে ই-মেইলেও পাঠিয়ে দেয়া যায়।
আবেদনের ফরম্যাট বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এত বেশি আনুষ্ঠানিকতার কিছু নেই। একটা কাগজে ছাত্রছাত্রীর নাম, অধ্যয়নরত বিভাগের নাম, আইডি/রোল নং, ব্যাচ ও সেশন, বর্তমানে অধ্যয়নরত সেমিস্টার, গন্তব্য জেলার নাম লিখে জমা দিলেই হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের যারা বাড়ি যেতে ইচ্ছুক তাদের আবেদন করতে বলা হয়েছে। আমাদের আগে দেখতে হবে, কত সংখ্যক শিক্ষার্থী ঢাকায় আটকে আছে। আবেদন শেষ হলে শিক্ষার্থী সংখ্যার অনুপাতে বিভাগীয় শহরগুলোর জন্য বাস দেয়া হবে। যারা খুবই ইমার্জেন্সি বাড়ি যেতে হবে, তারাই আবেদন করুক।
প্রসঙ্গত, প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা ।
এদিকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফি মওকুফ এবং অতিসত্বর কভিডের টিকা প্রদান করাসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জবি শাখা। গতকাল সংগঠনটির সহসভাপতি সুমাইয়া সোমা ও সাধারণ সম্পাদক তানজিম সাকিবের যৌথ বিবৃতিতে এসব দাবি জানানো হয়।
তাদের দাবিগুলো হলোÑজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচকর্তা-কর্মচারীদের কভিড ভ্যাকসিন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে হবে; ঈদের ছুটির আগে লকডাউনে আটকেপড়া শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে এবং সব ধরনের বেতন-ফি মওকুফ করতে হবে।
এ সময় বিবৃতিতে তারা বলেন, বর্তমান কভিড ক্রান্তিতে গোটা দেশ যেখানে থমকে গেছে, জবির ২০ হাজার শিক্ষার্থীদের অবস্থা সেখানে ভয়াবহ। গত দেড় বছর ধরে অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ থাকায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন এলাকায় মেস-বাড়ি ভাড়া করে, টিউশন ও খণ্ডকালীন চাকরি করে পড়াশোনার খরচ বহন করছে।
এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কভিডকালীন শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে বরং কভিডকালীন আগে ও পরে বিভিন্ন পরীক্ষার ফি চাপিয়ে দিয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের ওপর বোঝা ও অমানবিকতার প্রকাশ ঘটেছে। তাই আমরা প্রশাসনের নিকট দাবি জানাচ্ছি যেন অবিলম্বে এই দাবি সমূহ মেনে নেয়া হয়।