উন্নয়নের বুলিতে ‘রাজনৈতিক স্বাধীনতা’ উধাও: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে ‘অনেক উন্নয়ন’ করার দাবি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা করলেও ‘রাজনৈতিক স্বাধীনতা’ হারিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আজকে ৫০ বছর হয়েছে স্বাধীনতারÑএ ৫০ বছরে অনেকে অনেক কিছু বলে। আওয়ামী লীগ সব সময় বলছে, অনেক উন্নয়ন করে ফেলেছি। কিন্তু বেসিক জিনিসটা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। সেটা হচ্ছে আমাদের রাজনৈতিক যে স্বাধীনতা, সেই স্বাধীনতাকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বার্ষিকীতে গতকাল রাজধানীতে ‘ভোটাধিকার হরণের কালো দিবস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় একথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব

 বলেন, আমলারা একেবারে আকাশে উঠে গেছে। রাজনৈতিক নেতা ও আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, তাদের কোনো মূল্যই নেই। একজন ওসি সরাসরি বলেন, ‘আপনারা কে? আপনাদের তো আমরাই বানিয়েছি।’ অর্থাৎ রাজনীতিটা পুরোপুরিভাবে সরিয়ে দিয়ে একটা আমলাতান্ত্রিক-সামরিক আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা এখানে চালু করার ব্যবস্থা হয়েছে এবং তারা বলেছেনও…। পার্লামেন্টে তারা বসে বলতে শুরু করলেন, ‘এটাকে আমরা মালয়েশিয়ার মতো, সিঙ্গাপুরের মতো একটা রেজিমেন্টেড ডেমোক্রেসি দিতে চাই এবং উন্নয়নের জন্য আমাদের একটা রেজিমেন্টেড ডেমোক্রেসি দরকার।’ সেই কারণে এখানে সমস্ত ঘটনা তারা সাজিয়েছে।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফের ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতি’ হয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছে বিএনপি। নির্বাচনে অনিয়ম ও সহিংসতার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো।

সে প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওই নির্বাচনে সাবেক আমলা এইচটি ইমাম আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন। তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল, আমলাদের একজোট করে ভোটে জেতার ব্যবস্থা নিতে। আমরা যারা নির্বাচন করেছি, আমরা খুব ভালো করে জানি, এর প্রধান ভূমিকা যে মাঠে নেমে কাজটা করেছে, তারা হচ্ছে পুলিশ একেবারে পুরোপুরি। এ যে একটা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করা।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লক্ষ্য হচ্ছে সত্যিকার অর্থে একদলীয় ব্যবস্থা বহাল রাখা। আগে ছিল বাকশাল করে। এখন বাকশালকে ঘোষণা দিয়ে নয়, একটা মুখোশ পরিয়ে, একটা আবরণ পরিয়ে, গণতন্ত্রের মোড়কে রেখে একটা একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।’

সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ রায়, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, নিতাই রায় চৌধুরী, প্রান্তিক জনশক্তি উন্নয়ন-বিষয়ক সহ-সম্পাদক অপর্ণা রায়, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, তাঁতী দলের আবদুল কালাম আজাদ ও মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম বক্তব্য দেন।