প্রতিনিধি, রংপুর: আগামী ২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। এতে মেয়র পদে লড়ছেন ৯ প্রার্থী। এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে পরিকল্পিত মডেল সিটি গড়ার অঙ্গীকার করেছেন রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) ৯ মেয়র প্রার্থী। একই সঙ্গে বিজয়ী হলে দুর্নীতি করবেন না, জনগণের মঙ্গল ও এলাকার উন্নয়নে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন তারা।
গতকাল রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ‘জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে’ এ অঙ্গীকার করেন মেয়র প্রার্থীরা। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজনের) উদ্যোগে এ অনুষ্ঠান হয়।
সুজনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রংপুর মহানগর সুজন সভাপতি খন্দকার ফখরুল আনাম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রংপুরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিক।
আগামী ২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ইভিএমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে মেয়র পদে ৯ প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেনÑ আওয়ামী লীগের হোসনে আরা লুৎফা (ডালিয়া), জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান, জাসদের (ইনু) শফিয়ার রহমান, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের আমিরুজ্জামান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু রায়হান, খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল, জাকের পার্টির খোরশেদ আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) লতিফুর রহমান ও মেহেদী হাসান। জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তারা।
অনুষ্ঠানে মেয়র প্রার্থীরা উপস্থিত জনতার বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তারা রংপুরকে মডেল সিটি গড়ার অঙ্গীকার করেন।
নির্বাচিত হলে সিটির উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারব উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা বলেন, ‘সারাদেশের সিটি করপোরেশনে যেভাবে উন্নয়ন হয়েছে, সেখানে রংপুর সিটিতে তেমন উন্নয়ন হয়নি। যোগ্য নেতৃত্ব না থাকার কারণে এমনটি হয়েছে। এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। নির্বাচিত হলে সিটির উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারব আমি।’
আমার সময়ে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে দাবি করে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘সিটির মেয়র থাকাকালে পাঁচ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। কিছু উন্নয়নকাজ এখনও চলমান। সেই সঙ্গে শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত শ্যামাসুন্দরী খাল সংস্কারে একটি মেগা প্রকল্প কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সেটি বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, প্রশস্ত ও বিকল্প সড়ক এবং প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হবে।’
মেয়র হলে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে প্রকৃত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করব উল্লেখ করে জাসদের প্রার্থী শফিয়ার রহমান বলেন, ‘যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখব। জলাবদ্ধতা দূরীকরণে শ্যামাসুন্দরী খাল সংস্কারের বিকল্প নেই। খালটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে পানি প্রবাহ সৃষ্টি করার উদ্যোগ গ্রহণ নেবো।’
নির্বাচিত হলে যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করব উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী লতিফুর রহমান বলেন, ‘এই নগরের একটি মাত্র প্রধান সড়ক। সেই সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এতে সব সময় যানজট লেগে থাকে। নির্বাচিত হলে সড়ক প্রশস্তকরণসহ যানজট নিরসনে আপ্রাণ চেষ্টা করব। অটোরিকশার চাপ কমাতে কৃষিভিত্তিক কারখানা গড়ে তুলব, যাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।’ সভাপতির বক্তব্যে সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘অনেকে বলে আমি নাকি বিএনপির সমর্থক। আসলে বিএনপি কিংবা আওয়ামী লীগ কোনো দলের সঙ্গে নেই আমি। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও জনগণের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে আমি বিশ্বাসী। নির্বাচনে যে প্রার্থী জয়ী হবেন তিনি জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করবেন বলে আশা রাখছি।’