নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এবং সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে শেষে গতকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের এ কথা জানান। খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী ব্যক্তিগতভাবে এবং পারিবারিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আওয়ামী লীগের আমলে। তাই আওয়ামী লীগের বিচার সবচেয়ে বেশি দাবি করে বিএনপি। ফলে এই সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের বিচার অসম্পন্ন থাকলে বিএনপি ক্ষমতা গেলে স্বাধীন বিচার বিভাগের মাধ্যমে তা সম্পন্ন করবে।
নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট সংস্কার কার্যক্রম অবিলম্বে শেষ করে দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি বিএনপি জানিয়েছে বলেও জানান মোশাররফ। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আলোচনার বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি। আমরা যা অনুমান করেছিলাম তার ওপর ভিত্তি করে একটা লিখিত বক্তব্য নিয়ে এসেছিলাম। সেটা প্রধান উপদেষ্টাকে দিয়েছি। সেই ভিত্তিতে আলোচনা করেছি।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে একটি সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা। যে কোনো উছিলায় নির্বাচন যত বিলম্ব করা হবে আমরা মনে করি জাতির কাছে আবার স্বৈরাচার পুনরায় ফিরে আসার ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে। এর দায়-দায়িত্ব বর্তমান সরকার এবং তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ওপর বর্তাবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র উত্তরণের লক্ষ্যে বিএনপি প্রথম থেকেই একটি সুস্পষ্ট জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করে আসছে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘বিএনপি কখনোই প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চায়নি, বরং প্রথম থেকেই এ সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।’
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিএনপির চার নেতা। বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেনÑস্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ। এদিকে বিএনপির পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘নির্বাচন কবে হবে, সেটা স্পষ্ট করা দরকার। ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে জনগণের বড় ধরনের ভোগান্তি ছাড়া একটি স্বস্তিজনক সময়ে নির্বাচন হতে পারে।’
এরপর বৈঠকে অংশ নেয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। অপরদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে ছিলেন দলের আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা।
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন সময় আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন।