Print Date & Time : 16 September 2025 Tuesday 6:20 am

উপাচার্যের পরিবারের দেয়া বক্তব্যের জেরে বিবৃতি : ফের সমালোচনার মুখে জবি শিক্ষক সমিতি

 

প্রতিনিধি,জবি:  প্র‍য়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক এর স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে গত বুধবার (১৫ নভেম্বর) শোক সভায় বক্তব্য প্রদান কালে উপাচার্যের মেয়ে তাসলিম হক মোনার বক্তব্যকে অশোভন, দৃষ্টিকটু এবং শোক সভার ভাবগাম্ভীর্যকে বিনষ্ট করেছে বলে মন্তব্য করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

আজ রবিবার (১৯ নভেম্বর) জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আইনুল ইসলাম ও অধ্যাপক আবুল কালাম মো: লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সদ্যপ্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক স্যারের স্মরণে গত ১৫ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত শোকসভায় কোন কোন বক্তা প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন যা অশোভন, দৃষ্টিকটু এবং শোক সভার ভাবগাম্ভীর্যকে বিনষ্ট করেছে। উক্ত বক্তারা উপাচার্যের বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের উপর আলোকপাত না করে অযাচিতভাবে শিক্ষকদেরকে দোষারোপ করে একপেশে মন্তব্য করেন যা অসত্য এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, উপাচার্য একজন সৎ, নিবেদিত প্রাণ এবং দক্ষ প্রশাসক হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাহাড়সম সমস্যাকে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় সমাধানে উদ্যোগী হয়েছিলেন। শিক্ষক সমিতিসহ সকলেই খুব আন্তরিকভাবে মাননীয় উপাচার্যের কর্মযোগে শামিল হয়েছিলেন বলেই তার দায়িত্বকালীন সময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালযের অগ্রগতি দৃশ্যমান হয়েছিল।

তবে শিক্ষক সমিতির এই আচরণে বিক্ষুব্ধ হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, উপাচার্যের পরিবার এমনিতেই শোকে কাতর তার উপর তার পরিবারকে এইরকম বিবৃতি দিয়ে আরও মানসিকভাবে দূর্বল করা শিক্ষক সমিতির কাছ থেকে কখনো আশা করা যায় না। বাবার প্রতি অনার্য কিছু হলে সন্তানরা তার সমালোচনা করবেন বিষয়টি স্বাভাবিক ই। তাদের এভাবে হয়রানি করা ছোট মানসিকতার পরিচয়।

প্রসঙ্গত, সভায় বক্তব্য প্রদানকালে প্রয়াত উপাচার্যের মেয়ে মোনা বলেন, জীবিত থাকা অবস্থায় আমরা যেসব মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে গেছি সেটা আসলে অবর্ণনীয়। উনি সুস্থ থাকা অবস্থায় উনার অক্ষমতা দেখিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাবা আইসিউতে গিয়েছেন মাত্র একদিন হয়েছিল তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে আমি জানতে পারি বাবা ৫দিন ধরে আইসিউতে আছেন এমন একটি সংবাদ ছড়ানো হচ্ছে জবি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে৷ এটাত এক প্রকার এমন বিষয় যে বাবা জীবিত থাকা অবস্থায়ই বাবাকে মেরে ফেলেছে শিক্ষক সমিতি।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ফোন দিয়ে চার্জ করা হয়েছে, যে উনার আসলে কি অবস্থা। উনারা কি আসলেই জানতেন না কি অবস্থা? এমন পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষক সমিতি নিজেদের মধ্যে থেকে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করে, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমাদেরকে হয়রানি করার জন্যই এমনটাই করেছেন জবি শিক্ষক সমিতি। উনারা মনে করেছিল আমরা মেয়ে মানুষ, হুমকি দিয়ে কথা বললে চুপ হয়ে যাবো। তখন যারা সহযোগিতা করেছেন আমি তাদের কাছে সবসময় কৃতজ্ঞ থাকবো মন থেকে।

শিক্ষক সমিতির এমন বিতর্কিত কর্মকান্ডের অভিযোগ করে সমিতির একাংশের নেতৃত্ব বলেন, উপাচার্য সিন্ডিকেট আয়োজনের অনুমতি দিলেও শিক্ষক সমিতি তাদের পছন্দের একটি বিভাগের শিক্ষক যেন পদন্নোতি পায় সেজন্য সিন্ডিকেট সভা পিছিয়ে দিয়ে অন্য যেসব শিক্ষক পদন্নোতি পাবার কথা ছিল তাদেরকেও আটকে দিয়েছেন। নির্দিষ্ট কয়েকজন শিক্ষকের কারণে এখন সবার পদন্নোতি আটকে আছে। সিন্ডিকেট সভা ও বোর্ড বসিয়ে এ পদন্নোতি দেয়ার কথা ছিল।