Print Date & Time : 16 August 2025 Saturday 5:58 am

ঋণ খেলাপের দায়ে বাগদাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: সিটি ব্যাংক লিমিটেডের ২০১২ সালে করা মামলায় ঋণখেলাপি ও চট্টগ্রামভিত্তিক বাগদাদ গ্রুপের এমডি ফেরদৌস খান আলমগীরকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ। গতকাল বুধবার সকালে নগরের লালদিঘি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তার মালিকানাধীন বাগদাদ গ্রুপ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৩০০ কোটি টাকা খেলাপি। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে অর্থঋণ আদালত ১০টি ওয়ারেন্ট জারি করেছিলেন।

সিটি ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, বাগদাদ গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বাগদাদ এন্টারপ্রাইজের নামে সিটি ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে ১৭ কোটি টাকা ঋণ নেয়া হয়। কিন্তু ঋণের পাওনা নিয়মিত পরিশোধ না করায় খেলাপি হয়ে পড়েন। এ টাকা আদায়ে ২০১২ সালে অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়ের করে ব্যাংকটি। এ মামলায় খেলাপি পাওনা আদায়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন অর্থঋণ আদালত। কিন্তু দীর্ঘসময় ধরে তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। গতকাল সকালে অন্য একটি মামলায় হাজিরা দিতে আসেন, যা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অবগত ছিল। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানান তারা। পরে সকালে নগরের লালদিঘি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। পরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে বাগদাদ এন্টারপ্রাইজের নামে নেয়া ঋণ বর্তমানে সুদে-আসলে ৩৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

অপরদিকে ফনিক্স ফাইন্স্যাসের এক মামলায় ২০১৯ সালের আগস্টে কানাডা থেকে দেশে ফিরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার হন ফেরদৌস খানের স্ত্রী মেহেরুন নেছা। পরে জামিন নিয়ে কানাডায় চলে যান। তার বিরুদ্ধেও খেলাপি ঋণের ১৫টি মামলা রয়েছে।

জানা যায়, বাগদাদ পরিবহন ও বাগদাদ প্রপার্টিজ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়। প্রথমে ভালো লেনদেন করলেও পরে পরিশোধে গড়িমসি শুরু করে। এর মধ্যে রয়েছে ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৫৫ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের ৪৬ কোটি, সিটি ব্যাংকে ৩৩ কোটি টাকা, ব্যাংক এশিয়ার ১২ কোটি টাকা, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ১৫ কোটি টাকা। খেলাপি পাওনা আদায়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো চেক প্রত্যাখ্যান ও অর্থঋণ আদালতে ৫০টির অধিক মামলা করে। এসব মামলায় আদালত ১০টির বেশি গ্রেপ্তারি পরোয়োনা জারি করে। এদিকে কয়েক বছরে বাগদাদ গ্রুপের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। বিলাসবহুল মার্সিডিজ বাসগুলো অকেজো হয়ে গ্যারেজে পড়ে রয়েছে।

সিটি ব্যাংক লিমিটেডের আইন কর্মকর্তারা বলেন, সিটি ব্যাংক লিমিটেডের ২০১২ সালে করা মামলায় ফেরদৌস খান আলমগীরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার মালিকানাধীন বাগদাদ এন্টারপ্রাইজের কাছে আদালতের ডিক্রিমূলে ১৭ কোটি চার লাখ টাকা পাওনা। আর আমাদের সুদাসলসহ মোট খেলাপি পাওনা ৩৩ কোটি টাকা।