সাইদ সবুজ, চট্টগ্রাম: কাস্টম হাউসে রাজস্ব ফাঁকি ও অনিয়ম উদ্ঘাটনে প্রহরীর কাজ করে অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখা। মূলত গোপন সংবাদ ও সন্দেহযুক্ত চালান অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে লক করে অনিয়ম উদ্ঘাটন করে শাখাটি। তেমনই চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর শাখা গত ১৭ মাসে সাড়ে তিন হাজার চালান আটক করে দেড় হাজারের অধিক অনিয়ম উদ্ঘাটন করেছে। তাতে রাজস্ব ফাঁকি রোধ হয়েছে দেড়শ’ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর শাখা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর শাখা দুই হাজার ৭০৭টি চালান আটক করে। এসব চালান শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করে এক হাজার ২৯৫টি চালানে অনিয়ম পায়। তাতে অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হয় ১৫৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
এআইআর শাখার কর্মকর্তারা জানান, আমদানিরর ক্ষেত্রে মিথ্যা ঘোষণা সাধারণ বিষয় হয়ে গেছে। প্রায় প্রতিদিনই মিথ্যা ঘোষণার পণ্য আটক হয়। কিন্তু অনিয়মের চালান খালাস নিতে অনেক সময় আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ মিলে সিন্ডিকেট করে নানা অপকৌশল অবলম্বন করে। ফাঁকি দিতে চায় কোটি টাকার রাজস্ব। কোনো কোনো চালানে তারা সফল হলেও বেশিরভাগ সময়ই আমাদের নজরদারি ও পাতা ফাঁদে পড়ে আটক হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বেশি অনিয়ম ধরা পড়েছে চলতি বছরের জানুয়ারিতে। ওই মাসে ৩১৬টি চালান আটক হয়। এর মধ্যে কায়িক পরীক্ষা করে ১৬৬টি চালানেই অনিয়ম খুঁজে পায় এআইআর শাখা। তাছাড়া বাকি মাসগুলোতেও আটককৃত চালানে ৪০ থেকে ৬১ শতাংশ পর্যন্ত অনিয়ম পেয়েছে কাস্টম।
এছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে সন্দেহযুক্ত চালান আটক করে ৯৪০টি। তার মধ্যে ৭৫০টি চালান শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করে ৩৭৯টিতে অনিয়ম পায় এআইআর শাখা। আর এসব অনিয়ম উদ্ঘাটনের ফলে প্রায় অতিরিক্ত ২৯ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়। কর্মকর্তারা জানান, চলতি অর্থবছরের জুলাই ও সেপ্টেম্বরে বেশি অনিয়ম ধরা পড়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে। জুলাইয়ে ১১১টি এবং সেপ্টেম্বরে ১০০টি অনিয়ম ধরা পড়ে। এসব অনিয়ম উদ্ঘাটন করতে না পারলে ৩৭৯টি চালানের বিপরীতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ২৯ কোটি টাকা রাজস্ব হারাতো।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম শেয়ার বিজকে বলেন, সব সময় এআইআর শাখা রাজস্ব ফাঁকি ধরতে তৎপর থাকে। সর্বশেষ নভেম্বরে সন্দেহযুক্ত ১১১টি চালান এআইআর শাখা আটক করে। এর মধ্যে ৭০টি চালান কায়িক পরীক্ষা করা হলে ৫০টি চালানে অনিয়ম দেখা যায়। আর এ ৫০টি চালানের মধ্যে ১৭টি চালান নিষ্পত্তি করে এক কোটি ৬৬ লাখ টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।