Print Date & Time : 14 September 2025 Sunday 8:14 pm

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পেছানোর দাবি কতটা যৌক্তিক

আগামী ১৭ আগস্ট থেকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। ইতোমধ্যেই পরীক্ষা গ্রহণের সবরকম প্রস্তুতি গ্রহণ করে ফেলেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর এ ক্ষণকালে পরীক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে পড়েছে পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলন করতে। পরীক্ষার দুই মাস পর  গ্রহণ করতে হবে, না হয় এক পরীক্ষা থেকে অন্য পরীক্ষার মাঝে কয়েকদিন ছুটি রাখতে হবে, নতুবা ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবেÑ এরকম কিছু দাবিতে তারা আন্দোলনে নেমেছে।

 প্রশ্ন ওঠে, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে পরীক্ষা পিছিয়ে দেয়ার জন্য আন্দোলন কতটা যৌক্তিক। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলো বেশ সক্রিয় কর্মসূচি পালন করছে। যাতে করে তৈরি হচ্ছে তীব্র যানজট। সাধারণ মানুষ যথাসময়ে এক স্থান থেকে অন্যত্র পৌঁছাতে ব্যর্থ হচ্ছে। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয়তা আর রাজনৈতিক অস্থিরতা বেড়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এ অবস্থায় পরীক্ষা পিছিয়ে দিলে তা পরীক্ষার্থীদের জন্য নিরাপত্তাহীনতার কারণ হতে পারে এবং অভিভাবকগণের জন্য তা হতে পারে উদ্বেগের। যেহেতু পরীক্ষা শুরু হওয়ার আর মাত্র অল্প কিছুদিন বাকি। শিক্ষা বোর্ডগুলোও  প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরীক্ষাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহƒত হবে সেগুলোও প্রস্তুত করা হয়েছে ইতোমধ্যে। এমনকি এ পরীক্ষা শেষে সেসব প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব শ্রেণিগুলোর বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে। সেভাবেই সাজানো হয়েছে একাডেমিক কার্যক্রম। এখন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা পিছিয়ে দেয়া হলে ওই কেন্দ্রগুলো বিপাকে পড়ে যাবে তাদের নিজ নিজ একাডেমিক কার্যক্রম। পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলনকে আরও নড়বড়ে করে দিয়েছে পরীক্ষার অতি নিকটস্থতা। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যথেষ্ট সময় হাতে রেখেই পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছে; যা পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য যথেষ্ট বলে মনে করা যায়। ঘোষিত সময়ে পরীক্ষা সম্পন্ন হলে পরীক্ষার্থীরা বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা পাবে। আসন্ন নির্বাচনী কার্যক্রম এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয়তা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার সুষ্ঠু পরিবেশে বিঘœ ঘটাতে পারে। ফলে নিরবচ্ছিন্নভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে কিছুটা অনিশ্চয়তা থেকে যায়। বিপরীতে ঘোষিত সময়ে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়ে গেলে পরীক্ষার্থীরা নিশ্চিত থাকতে পারবে এবং মানসিক স্বস্তিতে পরবর্তী ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য লম্বা একটি সময় পাবে।  অন্তত এ বিবেচনায় পরীক্ষার্থীদের উচিত পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলন বন্ধ করে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করা। অভিভাবকদের উচিত, সন্তানদের বুঝিয়ে পরীক্ষার জন প্রস্তুতি নিতে সহায়তা করা।

সাইদুর রহমান শাহিদ, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়