Print Date & Time : 4 August 2025 Monday 11:53 am

একটি সেতুর অভাবে ২৫ গ্রামবাসীর দুর্ভোগ

চঞ্চল সরদার, রাজবাড়ী: একটি সেতুর জন্য বছরের পর বছর চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার চরাঞ্চলের প্রায় ২৫ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ। শুকনো মৌসুমে কোনো রকমে চলাচল করতে পারলেও বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগের শেষ থাকে না তাদের। শুধু দুর্ভোগই নয় বর্ষায় অনেক ছাত্রছাত্রীর স্কুল ও কলেজে যাওয়া-আসাও বন্ধ হয়ে যায়।
জানা গেছে, রতনদিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলে পশ্চিম হারুয়া, মাধবপুর, কামিয়া, হরিণবাড়ীয়া, কৃষ্ণনগর ও বাঘলপুরসহ প্রায় ২৫টি গ্রামে ২০ হাজার মানুষ বসবাস করে। এসব চরাঞ্চলের মাঝখান দিয়ে রয়েছে পদ্মা নদীর ছোট্ট একটি শাখা। যা নদীর কোল হিসেবে পরিচিত। আর এসব অঞ্চলের অধিকাংশই মানুষ যাতায়াত করে গঙ্গারামপুর হিরু মোল্লার ঘাট দিয়ে। এ ঘাটে রয়েছে প্রায় ১০০ মিটার লম্বা একটি বাঁশের সাঁকো। শুকনো মৌসুমে সবার ভরসা এ সাঁকো। শুধু মানুষই নয় মোটরসাইকেলসহ রিকশা ও ভ্যানের ভরসাও এ সাঁকো।
তবে পরিস্থিতি পাল্টে যায় বর্ষা মৌসুমে। পদ্মার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়তে থাকে ওই কোলের পানি। ফলে ওই সাঁকোর একাংশ তলিয়ে গিয়ে পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। তখন এ অঞ্চলের মানুষ স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ও হাটবাজারে যাতায়াত করে খেয়া নৌকা দিয়ে।
মোহন মিয়া নামে এক বৃদ্ধ জানান, বছরের পর বছর তারা এভাবে পারাপার হয়ে আসছেন। আগে এই সাঁকোও ছিল না। শুকনো মৌসুমে কোলের তলদেশ দিয়ে পায়ে হেঁটে ও বর্ষা মৌসুমে খেয়া নৌকা দিয়ে মানুষ যাতায়াত করত। এ ঘাটে একটি সেতু হলে এসব অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হতো। আলামিন হোসেন নামে এক ছাত্র জানান, সাঁকো তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে অনুপযোগী হয়ে গেছে। তাই তারা স্কুল-কলেজে যেতে পারছেন না।
ইউপি সদস্য লতিফ মোল্লা জানান, চরাঞ্চলের প্রায় ২৫ গ্রামের মানুষের চলাচল এ সাঁকো দিয়ে। নদীর পানির বৃদ্ধির ফলে এ কোলের পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে সাঁকোটির কিছু অংশ। ফলে এ সাঁকো দিয়ে মানুষ এখন আর চলাচল করতে পারছে না। বিকল্প হিসেবে খেয়া নৌকায় পারাপার হচ্ছে মানুষ। কিন্তু মাত্র একটি খেয়া নৌকা থাকায় সেখানেও চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
রতনদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসিনা পারভীন জানান, চার বছর আগে উপজেলা পরিষদ এ সাঁকোটি নির্মাণ করে দেয়। পরবর্তীতে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর দুই লাখ টাকা ব্যয়ে সাঁকোটি সংস্কার করেছেন। শুকনো মৌসুমে এ সাঁকোর ওপর দিয়ে মানুষ চলাচল করতে পারলেও এখন পানি উঠে যাওয়ায় তারা আর চলাচল করতে পারছে না। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। এখানে মাত্র একটি সেতু হলেই পাল্টে যেত এ অঞ্চলের চিত্র। লাঘব হতো মানুষের ভোগান্তি।