ক্রীড়া প্রতিবেদক: কথায় আছে কোণঠাসা বাঘ নাকি ভয়ঙ্কর। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে অবশ্য ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া কিছুই করার থাকে না। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অবস্থাটাও হয়েছে এমন। সিলেট টেস্টে ব্যর্থতার পর এখন জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই। কারণ, হার কিংবা ড্রতে সিরিজটা হাতছাড়া হবে। জিতলে তবেই সিরিজ ড্র’র স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারবেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
আজ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে মিরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শুরু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। আগাম ইঙ্গিত হলো, টেস্টে একাধিক পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামবে দল। সেক্ষেত্রে তিনটি পরিবর্তনের কথা প্রায় নিশ্চিত। কারণ সিলেটের একাদশ নিয়ে অনেক সমালোচনায় হয়েছে। বিশেষ করে একজন পেসার নিয়ে খেলায় তোপের মুখে পড়তে হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টকে।
এ অবস্থায় মিরপরের উইকেটের কথা ভেবেই পরিবর্তন আনা হবে দলে। অধিনায় মাহমুদউল্লাহও তেমনই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন। তাছাড়া জিম্বাবুয়ে ১৭ বছর পর দেশের বাইরে টেস্ট জিতে এখন উড়ছে। বিদেশের মাটিতে তৃতীয় টেস্ট জয়ের আনন্দে বিভোর তারা।
গতকাল মিরপুরে সংবাদ সম্মলেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ জানান, ‘কিছু পরিবর্তন’ আসছে সিলেটে। প্রথম টেস্টে জিম্বাবুয়ের ১৫১ রানের হারের জন্য মূলত দায়ী করা হচ্ছে ব্যাটসম্যানদের। তারপরও আজ শুরু ঢাকা টেস্টের একাদশে মূল পরিবর্তন আসতে পারে বোলিংয়ে।
৯ মাস পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরতে পারেন মোস্তাফিজুর রহমান। তার জন্য অপেক্ষায় দল। সেটা আগের দিনই জানান অলরাউন্ডার আরিফুল হক। বাঁ-হাতি এই পেসার সর্বশেষ ফেব্রুয়ারিতে খেলেছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। বাংলাদেশ দলে আরও একজন পেসারকে দেখা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে শফিউল ইসলামের নাম শোনা যাচ্ছে। শফিউলকে জায়গা করে দিতে হলে বাদ পড়বেন আবু জায়েদ রাহী।
ব্যাটসম্যানদের মধ্যে চাপে আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাদ পড়তে পারেন এই তরুণ ক্রিকেটার। তার বদলে মোহাম্মদ মিঠুনের টেস্ট অভিষেক হয়ে যেতে পারে। আরেক স্পিনার নাজমুল ইসলামকে টেস্ট অভিষেকের পরের ম্যাচেই একাদশের বাইরে যেতে হতে পারে। যদিও তিনি সিলেট টেস্টে ৪ উইকেট শিকার করেছেন।
মিরপুরের উইকেট নিয়ে গতকাল মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘মিরপুরের উইকেট সব সময়ই একটু অপ্রত্যাশিত আচরণ করে। যেটা প্রত্যাশা করবেন, সেটা না হলে মানিয়ে নিতে হবে আপনাকে। এ ম্যাচে যাচ্ছি মাথা শূন্য করে আমরা। পিচ, কন্ডিশন যেমন হবে, সে অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করব। এটা সব সময়ই কঠিন, উইকেট একটু সেøা। সেøা উইকেট হলে রান করা একটু কঠিন হয়। কষ্ট করে রান করতে হবে। এখানকার উইকেট এমন না যে, বল ব্যাটে আসবে আর আপনি শট খেলতে পারবেন। খুব বুঝেশুনে খেলতে হবে। একেক বোলারের জন্য একেক শট খেলতে হবে, আপনার শক্তি অনুযায়ী।’
একাদশে পরিবর্তন নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাইছেন না রিয়াদ। যদিও অনেক দলই আগের দিনই একাদশ জানিয়ে দেয়। এ নিয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘সেরা একাদশ নিয়ে নিশ্চিত থাকলে অধিনায়ক তাদের সঙ্গে আগে থেকেই কথা বলার সুযোগ পায়। আর এতে করে তারাও মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে পারে। তবে আমার মনে হয়, এ বিষয়ে কিছু কিছু ব্যাপার জড়িয়ে থাকে। যেমন পিচটা কেমন হচ্ছে। হয়তো টিম ম্যানেজমেন্ট অনেক সময় দ্বিধায় থাকে যে, কে খেলবে আর কে খেলবে না। তবে আমরা আগে থেকেই একটা আভাস দিয়ে রাখি যে খেলতে পারে, তাকে জানানো হয়। অধিনায়ক হিসেবে এ বিষয়টি অবশ্যই স্বাগত জানাই আমি।’
ঢাকা টেস্টে টসটাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন মাহমুদউল্লাহ। জানান, ‘টসটা অবশ্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, যদি আপনি ধীর পিচে খেলেন, সেখানে চতুর্থ ইনিংসে স্পিনাররা বেশি সুবিধা পাবে।’