নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদের ছুটির পর নমুনা পরীক্ষা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৈনিক শনাক্ত কভিড-১৯ রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে, তিন দিন পর আবার ৩০ ছাড়িয়েছে মৃত্যুর সংখ্যা।
দেশে কভিড-১৯-আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে গত এক দিনে আরও ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে, সংক্রমণ ধরা পড়েছে আরও ৬৯৮ জনের মধ্যে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে সাত লাখ ৮০ হাজার ৮৫৭ হয়েছে। আর কভিডে মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ১৮১।
ঈদের ছুটির প্রথম দুই দিন নমুনা পরীক্ষা এক-চতুর্থাংশে নেমে আসায় শনিবার শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক ধাক্কায় নেমে এসেছিল ১৩ মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ পর্যায়ে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে তিন হাজার ৭৫৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৬১ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছিল সেদিন।
পরদিন নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কিছুটা বেড়ে পাঁচ হাজার ৫০৮ হয়। তাতে শনাক্ত হয় ৩৬৩ নতুন রোগী।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগের দিন ১০ হাজার ৩৪৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬৯৮ নতুন রোগী শনাক্ত করা গেছে।
সরকারি হিসাবে আক্রান্তদের মধ্যে এক দিনে আরও এক হাজার ৫৮ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন সাত লাখ ২৩ হাজার ৯৪ জন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছর ৮ মার্চ, যা সাড়ে সাত লাখ পেরিয়ে যায় গত ২৭ এপ্রিল। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত সাত এপ্রিল রেকর্ড সাত হাজার ৬২৬ নতুন রোগী শনাক্ত হন।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১১ মে তা সাড়ে ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ১৯ এপ্রিল রেকর্ড ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিশ্বে শনাক্ত কভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা এরই মধ্যে ১৬ কোটি ৩০ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩৩ লাখ ৭৯ হাজারের বেশি মানুষের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৪৬৬টি ল্যাবে ১০ হাজার ৩৪৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৭ লাখ ১৮ হাজার ৬৩টি নমুনা।
গতকাল নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী, শনাক্তের হার ছয় দশমিক ৭৫ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৬০ শতাংশ ও মৃত্যুহার এক দশমিক ৫৬ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪১ লাখ ৮৮ হাজার ৭৩৩টি। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ লাখ ২৯ হাজার ৩৩০টি।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে আছেন ২৩ পুরুষ ও ৯ নারী। তাদের মধ্যে ১৯ জন সরকারি হাসপাতালে, ১১ জন বেসরকারি হাসপাতালে ও দুজন বাড়িতে মারা যান।
তাদের মধ্যে ১৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, সাতজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, চারজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, তিনজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর ও একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ২১ জন ঢাকা বিভাগের, দুজন চট্টগ্রাম বিভাগের, দুজন রাজশাহী বিভাগের, দুজন খুলনা বিভাগের, একজন বরিশাল বিভাগের, তিনজন সিলেট বিভাগের ও একজন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
এ পর্যন্ত মৃত ১২ হাজার ১৮১ জনের মধ্যে আছেন আট হাজার ৮২০ পুরুষ ও তিন হাজার ৩৬১ নারী।