নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্রমেই বাড়ছে মোবাইল ফোন গ্রাহক ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা। এর মধ্যে গত এক বছরে অর্থাৎ ২০১৮ সালে দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এক কোটি ১৮ লাখ ও ইন্টারনেট গ্রাহক বৃদ্ধি পেয়েছে এক কোটি আট লাখ।
বিটিআরসির তথ্যমতে, ২০১৭ সাল শেষে ছিল দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৫১ লাখ। ২০১৮ সাল শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ কোটি ৬৯ লাখে। অর্থাৎ এক বছরে দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এক কোটি ১৮ লাখ। অন্যদিকে ২০১৮ সালের শেষে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ১৩ লাখ। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে এ সংখ্যা ছিল আট কোটি পাঁচ লাখ। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এক কোটি আট লাখ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছর পাঁচেক আগেও মানুষ ই-কমার্স সম্পর্কে বুঝত না। এখন সময় বদলে গেছে, মফস্বলের মানুষরাও এখন অনলাইটে কেনাকাটা করে। এক সময় চাকরির আবেদনের জন্য দোকানে যেতে হতো। এখন ঘরে বসেই তা করা যায়। অর্থাৎ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষ প্রতিনিয়ত আপডেট হচ্ছে, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে ইন্টারনেট ও হ্যান্ডসেটের ওপর।
তথ্যমতে, ২০১৭ সালে দেশে টেলিডেনসিটি ছিল ৯০ দশমিক চার শতাংশ, যা ২০১৮ সালে বেড়ে হয় ৯৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে টেলিডেনসিটি বৃদ্ধি পায় ছয় দশমিক ৪২ শতাংশ। এছাড়া ২০১৭ সালে ইন্টারনেট-ডেনসিটি ৪৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ, যা ২০১৮ সালে এসে দাঁড়ায় ৫৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। এক বছরে ইন্টারনেট-ডেনসিটি বৃদ্ধি পায় ছয় দশমিক ১৩ শতাংশ।
এদিকে ২০১৭ সালে দেশে ব্যবহারযোগ্য ব্যান্ডউইথের ক্যাপাসিটি ছিল ৭৮৫ জিবিপিএস, যা ২০১৮ সালে এসে দাঁড়ায় ৯৬০ জিবিপিএস। অর্থাৎ এক বছরে ব্যান্ডউইথের ব্যবহার সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৭৫ জিবিপিএস। আর ২০১৭ সালে ব্যান্ডউইথের ব্যবহার ছিল ৫৭৫ জিবিপিএস, যা ২০১৮ সালে এসে ব্যান্ডউইথের ব্যবহার বাড়ে ৯১৩ জিবিপিএস। অর্থাৎ এক বছরে ব্যান্ডউইথের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৩৮ জিবিপিএস।
বিশেজ্ঞরা জানায়, দেশে নতুন প্রযুক্তি ফোরজি চালুর পর গ্রাহক দ্রুত বাড়ছে এটি ইতিবাচক দিক। বিশেষ করে তরুণদের জন্য। এদেশের অনেক তরুণ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের কর্মক্ষেত্র তৈরি করছে।
পাশাপাশি প্রায় সব বয়সী মানুষ কমবেশি প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। আগে থ্রিজি, ফোরজি প্রযুক্তি সম্পর্কে মানুষ বুঝতো না। এখন প্রযুক্তি নিয়ে মানুষ অনেক সচেতন। গ্রাহকরা নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে আগ্রহ দেখায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফোরজিতে পর্যায়ক্রমে গ্রাহক বাড়ছে। তবে সেবাগুলো দিকে অপারেটরগুলোদের আরও গ্রাহকবান্ধব করতে হবে। পাশাপাশি স্মার্টফোনের মূল্য কমিয়ে আনতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। স্মার্টফোনের মূল্য সাশ্রয়ী হলে দেশে ব্যবহারকারীর সংখ্যা আরও বাড়বে। তবে, হ্যান্ডসেটের গুণগত মানও ঠিক রাখতে হবে।
নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশে ই-কমার্সে প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। এ খাতের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বেশিরভাগ তরুণ-তরুণী। ফোরজি প্রযুক্তির আশানুরূপ সেবা না পেলেও কাজের প্রয়োজনে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। এটি পর্যায়ক্রমে বাড়তে থাকবে। তবে সাশ্রয়ী মূল্য ও সেবার মান নিশ্চিত করা গেলে এর ব্যবহার ব্যাপক হারে বাড়বে বলেও জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।