শেয়ার বিজ ডেস্ক: এক বছর আগে ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান লিডল লাটভিয়ায় ব্যবসা পরিচালনা শুরু করে। খুচরা খাদ্যশিল্পে (মুদিপণ্য) জার্মানি ও ইউরোপের অন্যতম শীর্ষ এ প্রতিষ্ঠানটি গত বছর লাটভিয়ার রাজধানী রিগা ও আঞ্চলিক শহরগুলোয় ১৫টি শাখা চালু করে। গত এক বছরে লাটভিয়ায় তাদের স্টোর দাঁড়িয়েছে ১৯টিতে এবং এসব স্টোরে কর্মী রয়েছেন প্রায় দুই হাজার। শিগগির লিয়েপাজা শহরে আরেকটি নতুন শাখা খুলতে যাচ্ছে লিডল। খবর: দ্য বাল্টিক টাইমস।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান নিয়েলসনআইকিউ-এর সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, লাটভিয়ায় মাত্র ১৯টি স্টোর নিয়ে লিডল দ্রুততার সঙ্গে দেশটির তৃতীয় শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ক্রেতাদের ভিত্তিতে এ অবস্থানে উঠে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি। দেশটির মোট ভোক্তার ৩৯ শতাংশ লিডল থেকে কেনাকাটা করেছেন। ১১ শতাংশ ক্রেতা জানিয়েছেন, তাদের প্রধান মুদি দোকান লিডল।
এ সময়ের মধ্যে লিডল লাটভিয়ায় উৎপাদিত পণ্যের বিক্রি বাড়িয়েছে, যা দেশটির ভোক্তাদের কাছে আদৃত হয়েছে। একই সঙ্গে ইউরোপ ও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের উচ্চ গুণগতমানসম্পন্ন পণ্য বিক্রি করেছে। লিডল ৫০টি স্থানীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক সনদপ্রাপ্ত এবং যথাযথ উপায়ে পণ্য সরবরাহ করছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য ভোক্তাদের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কয়েকটি শুধু লাটভিয়ায় নয়, এস্তোনিয়ার লিডল স্টোরেও পণ্য সরবরাহ করছে।
কভিড-১৯ জনিত বিধিনিষেধ সত্ত্বেও এক বছর আগে লিডলের পণ্য কেনার জন্য স্টোরের সামনে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো, যা প্রতিষ্ঠানটিকে লাটভিয়ায় অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানটির মডেলরা এর প্রচার ও প্রসারে বিশেষ ভূমিকা রাখে বলে নিয়েলসনআইকিউ-এর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে। চলতি গ্রীষ্মে লাটভিয়ার খুচরা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে পরিচালিত এই জরিপে দেখা গেছে, মডেলরা লিডলের উচ্চগুণমান সম্পন্ন পণ্য যাতে কম খরচে ক্রেতার ব্যক্তিগত ও প্রতিদিনের পছন্দের ব্র্যান্ড হয়ে ওঠে সেই চেষ্টা করেন তারা এবং এ কারণে দেশটির ৬৪ শতাংশ অধিবাসী তাদের স্টোরে গিয়েছেন।
বোর্ড অব লিডল লাটভিয়ার চেয়ারম্যান জ্যাকব জোসেফসন বলেন, আমরা অনেক কারণে আমাদের লাটভিয়ার ক্রেতাদের কাছে কৃতজ্ঞ। অল্প সময়ের মধ্যে লিডল তাদের প্রধান মুদিপণ্যের দোকানে পরিণত হয়েছে। তাই লাটভিয়ায় আমরা দারুণ একটি বছর কাটাতে পেরেছি। আরও উন্নতির জন্য এসব কিছুই আমাদের নতুন স্টোর খুলতে উৎসাহ দিচ্ছে।
বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ক্রেতাদের জন্য লটারির আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জোসেফসন। এর প্রধান পুরস্কার বিএমডব্লিউ এসইউভি।
বাল্টিক অঞ্চলে নিয়েলসনআইকিউ-এর ভোক্তা গবেষণা বিভাগের প্রধান ইদিতা আসাকাভিসিয়েনে বলেন, লাটভিয়ার ৬১ শতাংশ বাসিন্দার অভিযোগ, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি তাদের প্রধান উদ্বেগের বিষয় এবং ৬২ শতাংশ বাসিন্দা খরচ কমিয়ে অর্থ বাঁচানোর জন্য কেনাকাটার অভ্যাস পরিবর্তন করেছেন। সেন্ট্রাল স্ট্যাটিসটিকস অফিসের আগস্টের তথ্য অনুসারে, গত ছয় মাসে দুগ্ধজাত পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বার্ষিক ভিত্তিতে অর্থাৎ গত বছরের হিসাবে দুগ্ধজাত পণ্যের দাম বেড়েছে ৩৯ দশমিক ২ শতাংশ।
দুগ্ধজাত পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে ইদিতা বলেন, নিয়েলসনআইকিউ-এর সবশেষ তথ্য অনুসারে, ৪৩ শতাংশ ক্রেতা লিডলের স্টোরগুলো থেকে এ ধরনের পণ্য কেনা বাড়িয়েছেন।
লিডলের ফেসবুক পেজ পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, গত এক বছরে ক্রেতাদের কাছে সবচেয়ে পছন্দের ছিল লিডলের নিজস্ব দুগ্ধজাত ব্র্যান্ড ‘পিলোস’। শীর্ষ পণ্যগুলোর মধ্যে ছিল, বাদাম ও অ্যালেস্টো ব্র্যান্ডে শুষ্ক ফল। এছাড়া আরও প্রিয় ছিল, দুলানো ব্র্যান্ডের মাংস। খাদ্যবহির্ভূত অন্য ব্র্যান্ডের মধ্যে পছন্দে শীর্ষে ছিল, লুপিলু (শিশুদের পোশাক, ডায়াপার, শিশুখাদ্য প্রভৃতি), গৃহস্থালি কেমিক্যাল, গাড়ির ধোয়ামোছার নানা পণ্য, সিয়েন ব্র্যান্ডের কসমেটিকস। ইউক্রেনের অনেক শরণার্থীকে উচ্চবেতনে স্টোর ও লজিস্টিক সেন্টারে চাকরি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ সহায়তা করে চলেছে।