Print Date & Time : 27 August 2025 Wednesday 3:16 pm

এক বছরে সন্দেহজনক লেনদেন ২৩% বেড়েছে 

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ব্যাংকিং খাতে মোট ১৭ হাজার ৩৪৫টি সন্দেহজনক লেনদেন ও কার্যক্রমসংক্রান্ত প্রতিবেদন (এসটিআর/ এসএআর) বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) দাখিল হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২২ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি। বিএফআইইউ-এর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় গতকাল মঙ্গলবার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সভাপতিত্ব করেন বিএফআইইউ’র প্রধান কর্মকর্তা এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম। সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও বিএফআইইউ’র উপ-প্রধান মো. কাওছার মতিন, মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান, কমিউনিকেশনস অ্যান্ড পাবলিকেশনস বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্বে) মহুয়া মহসীন, বিএফআইইউ’র পরিচালক, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমকর্মীরা।
সভায় জানানো হয়, প্রতিবছরের মতো এবারও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বিএফআইইউ বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ প্রতিবেদনে জুলাই ২০২৪ থেকে ডিসেম্বর ২০২৪ সময়কালের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম, বিশ্লেষণ ও পরিসংখ্যান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

প্রধান কর্মকর্তা এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘সন্দেহজনক লেনদেন বৃদ্ধির হার রিপোর্টিং সংস্থাগুলোর সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির প্রমাণ। মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিএফআইইউ সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

তিনি আরও জানান, গত অর্থবছরে বিএফআইইউ মোট ১১৪টি আর্থিক গোয়েন্দা প্রতিবেদন (ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স রিপোর্টস) বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থায় পাঠিয়েছে। একইসঙ্গে আইন প্রয়োগকারী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সঙ্গে তথ্য বিনিময়ের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২২০; যা আগের বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি।

বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘এটি অত্যন্ত জটিল ও সময়সাপেক্ষ একটি প্রক্রিয়া। তবে আমরা বিশ্বব্যাংকের এসএলএআর, ইউএসডিওজে, আইএসিসিসি, আইসিএআর-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তা নিচ্ছি। পাশাপাশি বিদেশি আইনি সংস্থা নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাসেল এন্টি-মানি লন্ডারিং (এএমএল) ইনডেক্স-২০২৪-এ বাংলাদেশের অবস্থান ১৩ ধাপ উন্নীত হয়ে এখন ৫৯-এ রয়েছে, যা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির নির্দেশক।’

সভায় বিএফআইইউ পরিচালক মুহাম্মদ আনিছুর রহমান বার্ষিক প্রতিবেদন নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা দেন। এতে ইউনিটের বিভিন্ন কার্যক্রম ও অর্জনের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে রিপোর্টিং প্রক্রিয়া, তথ্য বিনিময়ের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দেন বিএফআইইউ কর্মকর্তারা।

সভার মাধ্যমে বিএফআইইউ’র কার্যক্রম সম্পর্কে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের অবহিত করার পাশাপাশি, ভবিষ্যতে আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর আর্থিক গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়।