নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে কয়েক মাস ধরেই বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। বাড়ছে শেয়ার বেচাকেনার পরিমাণ। ফলে বাড়ছে ধারাবাহিকভাবে লেনদেন। এতে বাজারে গত এক মাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে ২৩ হাজার কোটি টাকা। শুধু ডিএসইতে নয়, অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও বাজার মূলধনের একই চিত্র লক্ষ করা গেছে।
বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের ফলে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ফলে দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই বাজার মূলধন বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তথ্যমতে, সর্বশেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৫৯ হাজার ২৬৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এক মাস আগে ১২ ডিসেম্বর বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ৩৫ হাজার ৩০১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ২৩ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা। আর এক বছরে এর পরিমাণ বেড়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি বাজার মূলধনের পরিমাণ ছিল তিন লাখ ১৮ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিনের মন্দা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছে পুঁজিবাজার। ২০১০ সালের ধসের পর দীর্ঘ সময় মন্দা বাজারে যেসব বিনিয়োগকারী বাজারে লেনদেন থেকে বিরত ছিলেন তারা বাজারমুখী হচ্ছেন। বর্তমান বাজারে বিদেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। সব মিলিয়ে ধসে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন তারা মুনাফা করতে শুরু করেছেন। ফলে বাজার পরিস্থিতি অনেকটা স্থিতিশীল। এর প্রভাবে বাজার মূলধন বেড়েছে। এটাকে ইতিবাচকও মনে করছেন তারা।
তথ্যমতে, ২০১৬ সালে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পাঁচ হাজার ৫৭ কোটি টাকার শেয়ার কেনেন। আর বিক্রি করেছেন তিন হাজার ৭১৬ কোটি টাকার শেয়ার। ফলে বিদেশিদের নিট বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। যার পরিমাণ ২০১৫ সালে ছিল মাত্র ১৮৫ কোটি টাকা। চলতি মাসে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিদেশিদের পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা করেন এমন একাধিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, গত ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বিদেশিদের বিনিয়োগের পরিমাণ আগের চেয়ে অনেকটা বেড়েছে। জানুয়ারি মাসেও এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে। দীর্ঘদিন পর বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কারণে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে। এমন পরিস্থিতি বিরাজ করলে বিদেশি বিনিয়োগ অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান তারা।
ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, বাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বেশ ভালো। তাছাড়া সাধারণ বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। সব মিলিয়ে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আর এ কারণে বাজার মূলধন বেড়েছে।
শুধু ডিএসইতেই নয়, দেশের অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সর্বশেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৯১ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা। এক মাস আগে যার পরিমাণ ছিল দুই লাখ ৬৮ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে সিএসইতে বাজার মূলধন বেড়েছে ২৩ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা। এক বছরে যার পরিমাণ বেড়েছে ৩৯ হাজার কোটি টাকা। এক বছর আগে (২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি) বাজার মূলধন ছিল দুই লাখ ৫২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা।