Print Date & Time : 11 September 2025 Thursday 7:26 pm

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানত বেড়ে ২৮০৮৫ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: এজেন্ট ব্যাংকিং দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। পাশাপাশি বাড়ছে ঋণ ও আমানত। চলতি বছরের জুন শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৮৫ কোটি টাকা। আর ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ঋণ ৭ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রামীণ পর্যায়ের যেসব মানুষ ব্যাংকিং সেবার বাইরে ছিল এর মাধ্যমে অনেক মানুষ ব্যাংক সেবার আওতায় এসেছে। এছাড়া কভিড-১৯ মহামারির মধ্যে দেশে এজেন্ট ব্যাংকিং সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর সেই ধারাবাহিকতা এখনও বিদ্যমান রয়েছে। ফলে দিন দিন বেড়ে চলছে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের প্রসার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০২২ সালের জুন শেষে আমানতের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৮৫ কোটি টাকা। গত বছর একই সময়ে আমানত ছিল ২০ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে আমানত বেড়েছে ৭ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা বা ৩৭.৮১ শতাংশ। এছাড়া তিন মাসের ব্যবধানে আমানত বেড়েছে ২ হাজার ৯২০ কোটি টাকা।

চলতি বছরের জুন শেষে আমানত সংগ্রহের শীর্ষে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ। ব্যাংকটির আমানতের পরিমাণ ৩৯ দশমিক ১৫ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ডাচ বাংলা ব্যাংকের রয়েছে ১৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আর তৃতীয় অবস্থানে থাকা ব্যাংক এশিয়ার ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ।

আমানতের পাশাপাশি ঋণ বিতরণও বেড়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৪ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা। আর তিন মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১ হাজার ২২৪ কোটি টাকা।

ঋণ বিতরণের দিক দিয়ে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার আওতায় বিতরণ করা ঋণের ৬২ দশমিক ৬২ শতাংশই এই ব্যাংকটির দখলে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা দি সিটি ব্যাংকের ঋণ ১২.৭৫ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে ব্যাংক এশিয়ার বিতরণ করা ঋণ এ খাতের মোট ঋণের ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে আরও দেখা যায়, চলতি বছরের জুন শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে ৯৭ হাজার ৪৮ কোটি টাকা। যা ২০২১ সালের জুন শেষে ছিল ৬৭ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ বেড়েছে ২৯ হাজার ৯৪ কোটি টাকা।

জুন শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৫২ দশমিক ৮১ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ডাচ বাংলা ব্যাংকের ২৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ব্যাংক এশিয়ার ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

চলিত বছরের জুন শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৬০ লাখ ৭৪ হাজার ৩৭৮ জন। গত ২০২১ সালের জুন শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৩৫৮ জন। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে গ্রাহকের সংখ্যা বেড়েছে ৩৮ লাখ ৬৯ হাজার ২০ জন।

দেশে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সূচনা হয়েছিল মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ইসলাম শেখ ছিলেন দেশের প্রথম এজেন্ট। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে তাকে প্রথম এজেন্ট নিয়োগ দেয় ব্যাংক এশিয়া।

এদিকে, ব্যয়সাশ্রয়ী হওয়ায় প্রচলিত শাখা খোলার চেয়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। ফলে এজেন্ট আউটলেটের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে ২৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংক ১৪ হাজার ২৯৯টি এজেন্টের আওতায় ১৯ হাজার ৭৩৭টি আউটলেটের মাধ্যমে এ সেবা দিচ্ছে।