Print Date & Time : 22 July 2025 Tuesday 11:46 pm

এটিএম কার্ডের খরচ যৌক্তিক পর্যায়ে রাখুন

ডেবিট হোক আর ক্রেডিট হোক, অটোমেটেড টেলার মেশিনে (এটিএম) কার্ড নিয়ে ব্যবহারকারীদের ভোগান্তির শেষ নেই। নিজ ব্যাংক অতিরিক্ত চার্জ কেটে নেয়। আবার অন্য ব্যাংকের এটিএম বুথ ব্যবহার করলে বেশি মাশুল দিতে হয়। ব্যালান্স (স্থিতি) জানার রশিদের জন্য আলাদা টাকা নেওয়া হয়। উভয় ক্ষেত্রেই আরও আছে ভ্যাট বা মূসক। অনেক ব্যাংকে টাকা ওঠাতে গেলে দীর্ঘ লাইন থাকে। ব্যাংককর্মীরাও যেন সচেতনভাবেই সময়ক্ষেপণ করেন। বিরক্ত প্রকাশকারী সেবাগ্রহীতাকে বলেও ফেলেন, এটিএম কার্ড থাকলে আপনার সময় নষ্ট হতো না। ছুটির দিন, রাত- বিরাতে যখন-তখন টাকা ওঠাতে পারেন। আবার আর্থিক নিরাপত্তার কথা বলে গ্রাহককে অভ্যস্ত করার চেষ্টা করছে ব্যাংকগুলো। এখন এটিএম কার্ড দিয়ে অভিজাত ডিপার্টমেন্ট স্টোর, শপিংমল, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, হাসপাতালে কার্ডে বিল পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। তাই প্রয়োজনের তাগিদে এটি ব্যবহার করতে হয়।
অনেকদিন ধরেই নিয়ন্ত্রক সংস্থা এ খাতে শৃঙ্খলা আনার জন্য কাজ করছে। এটি মনে আশার সঞ্চার করলেও গতকাল শেয়ার বিজের ‘শুল্ক-ট্যারিফের প্রভাবে এটিএম কার্ডের খরচ দ্বিগুণ বাড়ছে’ শীর্ষক প্রতিবেদন ব্যবহারকারীদের হতাশ করবে। এতে বলা হয়েছে, এটিএম কার্ডে দুই ডলার, এনএফসি কার্ডে তিন ও ম্যাগস্ট্রাইপ কার্ডে ৭০ সেন্ট ট্যারিফ ধার্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ট্যারিফ আর শুল্কের কারণে কার্ড খরচ বাড়বে, যা গ্রাহককে পরিশোধ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে ৬০টি ব্যাংক ও ৩১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে সব ব্যাংক ও কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকরা কার্ড ব্যবহার করেন। বর্তমানে দেশে ব্যাংকিং সেবার আওতায় রয়েছেন প্রায় চার কোটি গ্রাহক। এর মধ্যে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ গ্রাহক এটিএম কার্ড বা প্লাস্টিক কার্ড ব্যবহার করেন। এসব গ্রাহকের মধ্যে সীমিত আয়ের চাকরিজীবীও আছেন, যাদের বেতন হয় ব্যাংকের মাধ্যমে। এটিএম কার্ডের খরচ বাড়লে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন আগে।
গ্রাহকদের ভোগান্তি বিবেচনায় কার্ডের চার্জ বাড়ানোর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করা উচিত। যেসব ব্যাংক নিয়ন্ত্রক সংস্থার নীতিমালা লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত সুদ আদায় করছে। সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠান যাতে লুকায়িত খাতে কোনো টাকা কর্তন না করে, সেদিকেও সতর্ক নজরদারি করতে হবে।
এবিবির সভাপতিও বলেছেন, ট্যারিফ বৃদ্ধি করায় তারা হতাশ। কারণ কার্ড আমদানিতে ৭৬ শতাংশ শুল্ককর দিতে হয়। ট্যারিফ বৃদ্ধির ফলে বাড়তি টাকা গ্রাহককে গুনতে হবে। তাই কার্ড আমদানিতে শুল্ককর কমালেও গ্রাহকদের ওপর চাপ কমবে।