‘এনআইডি সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসতে সময় লাগবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি সিদ্ধান্ত হলেও জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কার্যক্রমের পুরো প্রক্রিয়া নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে সভা শেষে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) দায়িত্ব কবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আসবেÑজানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, এটা তো অন্য প্রসঙ্গ (যেহেতু আইনশৃঙ্খলার কমিটির মিটিং)।

এনআইডি মাত্র সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটা লম্বা সময় লাগবে। আমাদের মন্ত্রণালয় এটা (এনআইডি) নিয়ে একটা ব্যবস্থার মাধ্যমে কাজ শুরু করবে।

এর আগে বুধবার এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের দায়িত্বে নেয়ার উদ্যোগ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

সরকার ইতোমধ্যে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করলেও এ বিষয়ে আলোচনা করার ওপর জোর দিয়ে সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘আলোচনা করতে হবে। কীভাবে নেবে না নেবে অবশ্যই তা নিয়ে আলোচনা হবে। এটা তো টেবিল-চেয়ার না যে উঠিয়ে নিয়ে গেলাম। এরপর সরকার কী সিদ্ধান্ত দেবে না দেবে এটা পরের কথা।’

অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান জানিয়েছিলেন, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সব ‘জেনে-বুঝেই’ এনআইডি সেবাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেয়া হয়েছে।

এক যুগ আগে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার শুরু থেকেই এ কাজ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে চলছিল। ইসির আপত্তির মধ্যেই সম্প্রতি সেই দায়িত্ব সুরক্ষা সেবা বিভাগের হাতে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও ইসির মধ্যে চিঠি চালাচালি চলছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ‘এনআইডির কার্যক্রম এখান থেকে চালাবেন কীভাবে; এখানে জায়গা হবে?’

এর জবাবে তিনি বলেন, ‘সবকিছুই ওখানে (ইটিআই ভবন) থাকবে। মন্ত্রণালয় থেকে মনিটর করা হবে। এনআইডি নিয়ে অনেকে অনেক বিতর্ক করছে। এটা তো হলো এমন এক জিনিস, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতেও এনআইডি লাগে, মোবাইলে এনআইডি লাগে, শনাক্ত করতে এনআইডি লাগে।

সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বেশি কিছু আর বলেননি মন্ত্রী।

আগের দিন বুধবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠান শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন সিইসি নূরুল হুদা।

জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের চিঠি পাঠিয়েছে, এটা নিয়ে যেতে চায়। এরপরও আমাদের সঙ্গে তাদের কথা বলতে হবে। আলোচনার জায়গা থাকছে। এটা তো বড় প্রতিষ্ঠান, এটা বড় ধরনের কমপ্লিকেটেড বিষয়।’

তার মতে, সরকারের রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী সুরক্ষা সেবা বিভাগের দায়িত্বে এনআইডি কার্যক্রম যুক্ত করে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে প্রজ্ঞাপন জারির পরও আলোচনার সুযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ইসির যে দক্ষ লোকবল রয়েছে, তাদের দিয়ে সেবাটা দিতে পারিÑএটা আমাদের যুক্তি। ইভেনচুয়ালি কী হবে না হবে তা তো এখন বলা যাবে না।’

বুধবার এরপর আরেক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, ‘এ বিষয়ে যেসব কথা হচ্ছে, তা একেবারেই অবান্তর। আমরা জেনে-বুঝে সবার মতামত নিয়ে এনআইডি সেবাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে দিয়েছি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শও নেয়া হয়েছে এ বিষয়ে।’