Print Date & Time : 19 July 2025 Saturday 3:06 am

এনবিআরের অর্জন ৬০ শতাংশ, কুমিল্লার শতভাগ

## দুইটি বিভাগ শতভাগ অনলাইন রিটার্ন দাখিলসহ দেশ সেরা কুমিল্লা ভ্যাট

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন ১২টি ভ্যাট কমিশনারেটের মধ্যে অনলাইন রিটার্ন জমায় পনেরবার প্রথম স্থান অধিকার করলো (সিইভিসি) কুমিল্লা টিম। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে মাঠে সক্রিয় কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট (সিইভিসি) কুমিল্লা টিম। চলতি বছরের অক্টোবর মাসে অনলাইন রিটার্ন দাখিলের হার ছিল ৯৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আর নভেম্বর মাসে অনলাইন রিটার্ন দাখিলের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামগ্রিক অনলাইন রিটার্ন জমার হার প্রায় ৬০ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

কুমিল্লা ভ্যাটের কর্মকর্তারা বলছেন, মুজিববর্ষে দেশকে ডিজিটাল করার প্রত্যয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে এনবিআরের অধীন অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন ও রিটার্ন দাখিল নিঃসন্দেহে ডিজিটাল কর্মকাণ্ড। আর এক্ষেত্রে এনবিআরের অর্জন যেখানে ৬০ দশমিক ৮৬ শতাংশ, সেখানে  কুমিল্লা ভ্যাটের অর্জন প্রায় শতভাগ। তবে এবার ভ্যাট দিবস ও সপ্তাহ পালন করতে গিয়ে কুমিল্লার প্রথম হওয়া নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে বেশ সংশয় ছিল। কুমিল্লা টিম এ চ্যালেঞ্জকে সফলভাবে মোকাবেলা করতে পেরেছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাসের ১ম তারিখ হতে কমিশনারের কক্ষে মিটিং করে কর্মকর্তাদের মধ্যে কাজ ভাগ করে দেয়া হয়। অনেক কর্মকর্তা স্বেচছায় ১০ ও ১১ ডিসেম্বর শুক্রবার ও শনিবারের সাপ্তহিক ছুটি বাতিল করে অনলাইন রিটার্ন দাখিলের কাজ অগ্রাধিকার দেন। লক্ষ্য কুমিল্লা ভ্যাট টিমকে পনোবারের এর মত চ্যাম্পিয়ন করা। অক্টোবর মাসে ড্রাপসে ৫১টি রিটার্ন জমা থাকায় রিটার্ন দাখিলের হার ছিল ৯৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। অক্টোবর মাসে ড্রাপসের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করায় নভেম্বর মাসের রিটার্ন দাখিলের হার দাঁড়ায় ৯৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। সাফল্যের পিছনে রয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপায়নের অঙ্গীকারে সক্রিয় থাকা কুমিল্লার কর্মবিলাসী টিম। আর এ টিমকে ক্যারিশমেটিক নেতৃত্ব দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মূল কারিগর হলেন কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী।

উপকমিশনার (সদর দপ্তর, কুমিল্লা) মো. ফখরুল আমিন চৌধুরী বলেন, দুইটি বিভাগ শতভাগ অনলাইন রিটার্ন দাখিল করতে সক্ষম হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সক্রিয়তার মাধ্যমেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। একটা ভালো ‘টিমওয়ার্ক’ এর মাধ্যমে এ অর্জন। স্বীকৃতি কাজের প্রণোদনা বৃদ্ধি করে। কর্মকর্তারা পরিশ্রম করেছেন। আমরা প্রকৃত কর্মীদের স্বীকৃতি দানের চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতেও রিটার্ন দাখিলের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এ বিষয়ে কুমিল্লা কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আবদুল হাকিম বলেন, ভ্যাট দিবস ও সপ্তাহ পালন করতে গিয়ে কুমিল্লার প্রথম হওয়া নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে বেশ সংশয় ছিল। তবে কুমিল্লা টিম এ চ্যালেঞ্জকে সফলভাবে মোকাবেলা করতে পেরেছে। দুইটি বিভাগ শতভাগ অনলাইন রিটার্ন দাখিল করতে সক্ষম হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ছয়টি শতভাগ অনলাইন রিটার্ন দাখিল করতে পারবে।   

এ বিষয়ে কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, অটোমেশন সরকারের অগ্রাধিকার। এনবিআর সে লক্ষ বাসস্তবায়নে বরাবরই অগ্রণী। কুমিল্লার কর্মপ্রবণ টিম প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। কুমিল্লার সঙ্গে এনবিআরের সম্মানও উচ্চকিত করেছে। দলবদ্ধ প্রচেষ্টা ও প্রতিযোগিতা এ অভূতপূর্ব সাফল্যের মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। সরকারের ডিজিটাল অঙ্গীকার বাস্তবায়নে বিশেষ এজেন্ডা নিয়ে এনবিআর কাজ করছে। দলবদ্ধ প্রচেষ্টা ও প্রতিযোগিতা এ অভূতপূর্ব সাফল্যের মূল নিয়ামক এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ কর্মকর্তাদের পরিশ্রম ও সাফল্যের পিপাসা কুমিল্লা কমিশনারেটকে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ও রিটার্ন দাখিলে উপর্যুপরি সাফল্য এনে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সক্ষম কর্মকর্তাদের বাছাই করে জটিলতর কাজে নিয়োগ, মনিটরিং উদ্বুদ্ধকরণ এক্ষেত্রে গতি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। সর্বোপরি কর্মস্থলে দেশাত্মবোধ ও সেবার মনোভাব থাকা জরুরি। সারা বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের এরকম কাজের ধারা অব্যাহত থাকা উচিত। দক্ষ, সক্ষম, উপযুক্ত ও রাজস্ব বৃদ্ধিতে সকল কর্মকর্তাদের আমরা পুরস্কৃত করি। ভবিষ্যতেও তাঁদের পুরস্কৃত করা হবে।

###