নিজস্ব প্রতিবেদক: নকশা জালিয়াতির মামলায় রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ারের মালিক ও নির্মাতাসহ ১৬ জনের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ সৈয়দ কামাল হোসেন আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এ মামলায় বিচারক ১ ডিসেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর দিন রেখেছেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জানান।
তিনি বলেন, ‘আদালত ১৬ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন। দুই আসামিকে অব্যাহতি দিয়েছেন।’
অভিযুক্তরা হলেনÑএফআর টাওয়ারের মালিক সৈয়দ হোসাইন ইমাম ফারুক (এসএমএইচআই ফারুক), রূপায়ণ গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল, এফআর টাওয়ার ওনার্স সোসাইটির সভাপতি কাসেম ড্রাইসেলের এমডি তাসভীর-উল-ইসলাম, রাজউকের সাবেক পরিচালক শামসুল আলম, সহকারী পরিচালক শাহ সদরুল আলম, সহকারী অথরাইজড অফিসার নজরুল ইসলাম, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক জাহানারা বেগম, সহকারী পরিচালক মেহেদউজ্জামান, রাজউকের উচ্চমান সহকারী সাইফুল আলম, ইমারত পরিদর্শক (নকশা জমা গ্রহণকারী) ইমরুল কবির, ইমারত পরিদর্শক শওকত আলী, উচ্চমান সহকারী শফিউল্লাহ, সাবেক অথরাইজড অফিসার শফিকুল ইসলাম, নি¤œমান সহকারী মুহাম্মদ মজিবুর রহমান মোল্লা, অফিস সহকারী এনামুল হক ও শওকত আলী। ঘটনাকালীন তত্ত্বাবধায়ক মোফাজ্জেল হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল বাকীকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
আসামিদের পক্ষে অব্যাহতি ও দুদকের পক্ষে অভিযোগ গঠনের আবেদনের শুনানি শেষে বিচারক অভিযোগ পড়ে শোনান। এরপর ১৬ আসামির কাছে জানতে চান, তারা দোষী না নির্দোষ। আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর দিন ঠিক করে দেন বিচারক। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ রাজধানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ে এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৭ নিহত হওয়ার পর এই ভবন নির্মাণে নানা অনিয়মের বিষয়গুলো বেরিয়ে আসতে থাকে। ওই ভবনের জমির মূল মালিক ছিলেন প্রকৌশলী এসএমএইচআই ফারুক। অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ভবনটি নির্মাণ করে রূপায়ণ হাউজিং এস্টেট লিমিটেড। সে কারণে সংক্ষেপে ভবনের নাম হয় এফআর টাওয়ার।
রাজউকের ছাড়পত্র ইস্যু, ফি জমা এবং নকশা অনুমোদন না নিয়ে ভুয়া নকশা সৃষ্টি করে এফআর টাওয়ারের ১৯ থেকে ২৩ তলা পর্যন্ত নির্মাণ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্ধক, বিক্রি ও অগ্নিকাণ্ডে জনসাধারণের জানমালের ব্যাপক ক্ষতির কারণে দুদকের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ২৫ জুন কমিশনের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন। গত বছর ১৩ ডিসেম্বর ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়।