এবারের বাজেট অপচয়-অসংগতি কমানোর : বিদ্যুৎ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এই বাজেট অপচয় অসংগতি কমানোর বাজেট। এই বাজেটকে ব্যতিক্রমী বাজেট বলব বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে গতকাল মঙ্গলবার তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এবার বিদ্যুৎ ও এলপিজির দাম কমানো হয়েছে। আমরা এলপিজি আমদানি করি ৬৫ টাকায়, বিক্রি করি ৩০ টাকায়। জ্বালানি বিভাগ থেকে এলপিজি ও জ্বালানি তেলের দাম কমিশন করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে জ্বালানির দাম কমানো হয়েছে। এলপিজি, গ্যাসের জন্য ভালো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটা করা হয়েছে সাধারণের মধ্যে স্বস্তি দিতে। তিনি বলেন, জ্বালানির দাম কমানোর ফলে গাড়ি ভাড়া কমবে। এক সময় আমরা নিজেরাও লিখেছি। তবে আগের থেকে এখনকার মৌলিক পার্থক্য হচ্ছে আমরা এখন সরকার হিসেবে কাজ করছি। সবাই একসঙ্গে কাজ করছি। সবাই মিলে চেষ্টা করছি দেশের জন্য।

বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি চাঁদাবাজি সীমিত করার। আমরা সড়ক বিভাগ থেকে চাঁদাবাজি সীমিত করতে পুলিশের সঙ্গে কাজ করছি। যারা গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন, তাদের থেকে বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে-এমনটা শোনার পরপরই ব্যবস্থা নিচ্ছি। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনার চেষ্টা করছি।’

প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। এই ঘাটতি পূরণে সরকার বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করবে। অভ্যন্তরীণ ঋণ নেয়া হবে এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া বৈদেশিক ঋণ হিসেবে নেয়া হবে ৯৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটে যা আছে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

আসন্ন বাজেটে অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধার নিতে চায় ব্যাংক খাত থেকে, যার পরিমাণ এক লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা। এরপর সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নেয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বিদ্যুৎ জ্বালানি সড়ক সেতু ও রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাণিজ্য বিমান বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ বিভিন্ন আর্থিক খাত ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।