Print Date & Time : 10 September 2025 Wednesday 3:15 pm

এমপি হত্যাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বললো ব্রিটিশ পুলিশ

ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য স্যার ডেভিড অ্যামিসের (৬৯) হত্যাকাণ্ডকে সন্ত্রাসী ঘটনা হিসেবে ঘোষণা করেছে দেশটির পুলিশ। খবর বিবিসির।

ব্রিটেনের কাউন্টার টেররিজম পুলিশের সমন্বয়ক উপসহকারী কমিশনার ডিন হেডন এ হত্যাকাণ্ডকে সন্ত্রাসী ঘটনা হিসেবে ঘোষণা দেন।

হামলা ও হামলাকারী সম্পর্কে কাউন্টার টেররিজম পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিস্তারিত জানানো হয়। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা এমআইফাইভ তদন্তকাজ পর্যালোচনা করছে।

এর আগে হত্যার ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছিলো, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ইসলামপন্থী উগ্রবাদীরা জড়িত। তদন্তের অংশ হিসেবে লন্ডনে দুটি ঠিকানার খোঁজ করছে পুলিশ।

অ্যামিস হত্যায় জড়িত সন্দেহে ইতোমধ্যেই সোমালি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ২৫ বছরের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঐ যুবক আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ উগ্রবাদীদের তালিকায় ছিলো জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম। পুলিশের ধারণা, গ্রেপ্তার ব্যক্তি একাই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে এসেক্সের লেহ-অন-সি শহরের একটি গির্জায় হামলার শিকার হন এমপি ডেভিড অ্যামিস। তিনি সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন। একাধিকবার ছুরিকাঘাত করে তাঁকে হত্যা করা হয়।

পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালে জো কক্স নামের লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত এক পার্লামেন্ট সদস্যকেও হত্যা করা হয় ব্রিটেনে।

পশ্চিমা বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ দেশগুলোর একটি হিসেবে পরিচিত যুক্তরাজ্যে গত পাঁচ বছরের মধ্যে দুইজন পার্লামেন্ট সদস্য হত্যার ঘটনায় দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

বিশেষ করে  অ্যামিসের হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্যদের নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ে নতুন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল সব পার্লামেন্ট সদস্যের নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যালোচনার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে নিহত ব্রিটিশ এমপির প্রতি শোক জানান  হাউস অব কমনসের স্পিকার লিন্ডসে হোয়েল। পাশাপাশি পার্লামেন্ট সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়ার ওপরও জোর দেন তিনি।

হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে অ্যামিসের বন্ধু কেভিন বাক বলেন, হত্যার সময় অ্যামিসের সহকারী ও ব্যক্তিগত সহকারী তাঁর পাশেই ছিলেন। পাঁচ বছরে দুজন এমপিকে হত্যার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি এমপিদের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দেওয়ার ওপর জোর দেন।

যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন দলের নেতারা ডেভিড অ্যামিস হত্যাকাণ্ডে শোক জানিয়েছেন। ডাউনিং স্ট্রিট ও পার্লামেন্টে পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে।

অ্যামিস হত্যার পর টিভিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, অ্যামিস দয়ালু, শান্ত ও অসাধারণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন।

লেবার পার্টির নেতা কেয়ার স্টারমার এটিকে কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত করেন।

স্যার ডেভিড অ্যামিস প্রায় ৪০ বছর পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৩ সাল থেকে বাসিলডন নামের একটি এলাকা থেকে এমপি নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ১৯৯৭ সাল থেকে সাউথ এন্ড ওয়েস্ট আসনটি ধরে রেখেছিলেন তিনি। তাঁর পাঁচ ছেলেমেয়ে।

রোমান ক্যাথলিক হিসেবে বেড়ে ওঠা স্যার ডেভিড অ্যামিস রাজনৈতিকভাবে সামাজিক সমতার পক্ষে ছিলেন। পাশাপাশি গর্ভপাতবিরোধী অবস্থান ও বন্য প্রাণী সুরক্ষায়ও সোচ্চার ছিলেন তিনি।